ঘূর্ণিঝড় অশনি প্রস্তুত ৯১ আশ্রয় কেন্দ্র
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সোমবার সকাল থেকে মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে বইছে হালকা বাতাস। অশনি মোকাবেলায় দুপুরে জরুরি সভা করেছে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা প্রশাসন। সভায় দুর্যোগ পূর্ব ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তত রাখা হয়েছে সুন্দরবনসহ উপজেলার ৯১টি আশ্রয় কেন্দ্র।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে অশান্ত হয়ে উঠছে বঙ্গোপসাগর। ঝড়ের পূার্বাভাস পেয়ে গত দুদিন আগেই শরণখোলার সমস্ত মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদে ঘাটে ফিরে এসেছে। অন্যান্য অঞ্চলে বহু ফিশিং ট্রলার এখনো সাগরে রয়েছে। ওইসব সব ট্রলার সাগরে কিনারে অবস্থান নিয়ে মৎস্য আহরণ করছে বলে মৎস্য ব্যবসায়ী ও বনবিভাগ সূত্র জানিয়েছে।
অপরদিকে, শরণখোলার মাঠের পাকা বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ১৫ বিঘার বোরো ধান কাটা বাকি রয়েছে এখনো। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মাঠের ধান নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষীরা। শ্রমিক সংকটে কারণে এসব পাকা ধান কাটতে পারছেন না বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, শরণখোলায় মোট সাড়ে তিন শ’ সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার রয়েছে। ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে সমস্ত ট্রলার সাগর থেকে দুদিন আগেই উঠে এসেছে। ট্রলারগুলো রাজৈর মৎস্য অবরণ কেন্দ্রসহ বগী, তাফালবাড়ী, রাজেশ্বর, পূর্ব খোন্তাকাটা ও কুমারখালী ঘাটে নিরাপদে অবস্থান করছে।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা আলোরকোল থেকে ফরেস্টার দিলিপ মজুমদার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মুঠোফোনে জানান, সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। হালকা বাতাসও বইছে। সাগর উত্তাল না হলেও ঢেউ হচ্ছে। দুবলার চরের কাছাকাছি সাগরের নিরাপদ দূরত্বে থেকে বহু ট্রলার মাছ ধরতে দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোস্তফা মশিউল আলম জানান, এবছর উপজেলায় সাড়ে তিন হাজার বিঘা জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। উতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি কাটা হয়ে গেছে। এখনো ১৫ শ বিঘা জমিতে পাকা ধান রয়েছে। ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়েই পাকা বোরো ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয় চাষিদের। কিন্তু, শ্রমিক সংকটের কারণে কাটতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তারা। বৃষ্টিতে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে ঝড়-বাতাসে পাকা ধান ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের বগী, চালিতাবুনিয়া, সোনাতলা, খুড়িয়াখালী এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে সহ¯্রাধিক পরিবার বসবাস করে। তারা ঝুঁকিতে রয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মো. নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। ৯১ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, মোমবাতি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুদ করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিটি ইউনিয়নে আলাদা আলাদা দুর্যোগ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও জানান, উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রায়হান উদ্দিন শান্তর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্থিন ছিলেন।
আপনার মতামত জানান