ইফতারে বিশ্বের জনপ্রিয় ১০ শরবত

প্রকাশিত



সারা দিন রোজা রাখার পর মুসলিমরা যখন ইফতার করে, তখন এক গ্লাস সুস্বাদু পানীয় তাদের সারা দিনের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। স্বাস্থ্যকর পানীয় সারা দিনের পুষ্টির অভাব পূরণেও সাহায্য করে। তাই শরবত বা সুস্বাদু পানীয় ইফতার আয়োজনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। ইফতারের দস্তরখানে বিশ্বের জনপ্রিয় কয়েকটি শরবতের বর্ণনা দেওয়া হলো।

১. তামারিন্দ শারবেত : উসমানীয় আমলের প্রবর্তিত বিখ্যাত তেঁতুলের শরবত। ৪১টি পৃথক মসলার সঙ্গে ৮ ঘণ্টা তেঁতুল সিদ্ধ করে এই শরবত প্রস্তুত করা হয়।


২. জাল্লাব : গোলাপজল, খেজুর ও আঙুরের গুড় দিয়ে তৈরি একটি মিষ্টি পানীয়। যা বরফ, পাইন বাদাম ও কিসমিস যোগে পরিবেশন করা হয়। ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন ও জর্ডানে এই শরবতের প্রচলন সবচেয়ে বেশি।

৩. রুহ আফজা : ভারতীয় উপমহাদেশের একটি জনপ্রিয় শরবত। রুহ আফজা মূলত এক ধরনের সিরাপ যা বিভিন্ন প্রকার ফল, গোলাপ ও ভেষজ উপাদানে তৈরি। গোলাপি রঙের ঘণ সিরাপটি ঠাণ্ডা পানি বা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়।

৪. ক্যারোব জুস : শুকনো ক্যারব (ফল বিশেষ) পানির সঙ্গে সিদ্ধ করা হয় যেন তাকে থাকা চিনিগুলো আঠালো হয়। এরপর পরিশোধন করে ঠাণ্ডা পানীয় তৈরি করা হয়। ক্যারব জুস লেবানন, ফিলিস্তিন ও মিসরে জনপ্রিয়।


৫. হেলো মুর : সুদানের গাঢ় বাদামি পানীয়টি তৈরি করা হয় শুকনো চূর্ণ করা ভুট্টা দানা ও মসলা দিয়ে। প্রথমে পানিতে ভুট্টা দানা ও মসলা ভিজিয়ে রাখা হয়, তারপর কয়েক ঘণ্টার জন্য রেফ্রিজেটরে রাখা হয়।

৬. কামার আল-দ্বিন : শুকনো এপ্রিকটের (ফল বিশেষ) দানা দিয়ে তৈরি করা হয় কামার আল-দ্বিন (দ্বিনের চাঁদ) শরবত। প্রথমে দানাগুলো পানিতে ভেজানো হয়। এরপর তরলীকৃত চিনি ও গোলাপজলের সঙ্গে মিশিয়ে তা পরিবেশন করা হয়। পানীয়টি সিরিয়ায় উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়।

৭. মহব্বত কা শরবত : তরমুজ ও গোলাপ সিরাপ দিয়ে তৈরি করা হয় জনপ্রিয় এই শরবত। গোলাপি রঙের পানীয়টি ঠাণ্ডা দুধ ও বরফের টুকরো যোগে পরিবেশন করা হয়। দিল্লি জামে মসজিদের আশপাশের এলাকা থেকে মহব্বত কা শরবতের প্রচলন ঘটে। গোলাপি রঙ, গোলাপের ঘ্রাণ ও তরমুজের ভাসমান টুকরো পানীয়টির বিশেষ আকর্ষণ।

৮. ইস কপিউর : ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের জনপ্রিয় ইফতার পানীয়। কপিউর নামক বিশেষ ধরনের নারকেল দিয়ে তা তৈরি হয়। এর সঙ্গে মেশানো হয় কমলার রস বা গোলাপের সিরাপ। এটাকে মাকাপুনোও বলা হয়। ইস কপিউরে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয় কপিউর নারকেলের শাস বা দুধ, চিনি, আগর পাউডার, গোলাপ সিরাপ বা কমলার রস।

৯. খেজুর-দুধের শরবত : পুষ্টিকর ইফতার সামগ্রি হিসেবে খেজুর দুধের শরবতটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনপ্রিয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) দুধ ও খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন—এমন বর্ণনা থেকে উদ্বুদ্ব হয়ে এই পানীয় তৈরি করা হয়। দুধের ভেতর কয়েক ঘণ্টা খেজুর ভিজিয়ে রাখা হয়। খেজুর নরম হয়ে গেলে তা গুলিয়ে সামান্য বরফ যোগে পরিবেশন করা হয়।

১০. তামারে হিন্দি : সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তুমুল জনপ্রিয় পানীয় তামারে হিন্দি। ভারতীয় এই পানীয় তৈরি করা হয় তেঁতুল ভেজানো পানির সঙ্গে চিনি ও বরফ মিশিয়ে। কখনো কখনো বরফ ছাড়াও তা পরিবেশন করা হয়।

তথ্যসূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড ও সৌদি মোমেন্টস ডটকম

আপনার মতামত জানান