ইতিহাসের শিক্ষা-১ঃ তৌহিদ এলাহী

প্রকাশিত



পৃথিবীতে ‘একুইটি/ইকুয়ালিটি’ কথাটা আলোয়েজ একটা মিথ। সভ্য সমাজ ব্যাবস্থা গডার পূর্বে ইকুয়ালিটি ছিল কি ছিল না সেটা হলফ করে বলা যায় না। হালকা একটা অনুমান করা যায়, কৃষি ব্যবস্থা (১২০০০ বছর) আবিষ্কারের পূর্বেও এটা ছিল না। তখন হান্টার-গ্যাদারার জীবন ব্যবস্থায় ছেলেরা হান্টিং করত, মেয়েদের আশে পাশে হতে ফলমূল শস্য যোগাড় করতে হত। জীবন ছিল নির্মম, আবেগের স্থান কম। দৌড়ের উপর থাকতে হত। অসুস্থ বৃদ্ধ গোত্র সদস্যদের পেছনে ফেলে চলে যাওয়া কিংবা মেরে ফেলাটাও অস্বাভাবিক না। দুর্বল অসুস্থ শিশুরাও বোঝাই ছিল। সন্তান জন্মদানে অক্ষমরা গোত্রে অনাহূত। অর্থাৎ ইকুয়ালিটি কনসেপ্টটাই ছিল না সেই ভাবে।

পৃথিবিতে প্রাচীনতম লিখিত আইন পাওয়া যায় আজ হতে প্রায় ৩৭০০ বছর আগের। ব্যাবিলনীয় সভ্যতার রাজা হাম্মুরাবি ২৮০ টা ধারাসহ একটা লিখিত আইন মানবজাতির জন্য রেখে গেছেন। আইনটার মূল সুর চোখের বদলে চোখ , দাঁতের বদলে দাঁত। তবে এখানে আবার বেশ বড় ফাকঁ ছিল। যদি হোমড়া চোমড়া কেউ ছোটলোক বা গরীব কারো দাঁত ভাংত তাহলে তার দাঁত না ভেংগে জরিমানা করার ব্যবস্থা ছিল। শুধুমাত্র ছোটলোক ছোটলোকের বা বড়লোক বড়লোকের দাঁত ভাংলে তখন দাঁতের বদলে দাঁত নিয়ম কার্যকর ছিল।

অর্থাৎ সব মানুষ সমান , আইন সবার জন্য সমান ব্যাপারটা কথার কথা। এটা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে কোনকালেই কার্যকর ছিল না এখনো নেই। তাই আমি আমার পূর্বপূরুষদের এই ব্যাপারে ধন্যবাদ দিতে পারি। তারা হিপোক্রিসি না করে সরাসরি আইনেই লিখে রেখে ব্যাপারটা আইনসিদ্ধ করার সৎসাহস দেখিয়েছেন।

আধুনিক বিশ্ব/সমাজ ব্যবস্থায় ফাঁকটা কোথায় ? এখানে কি সব মানুষ সমান নয়? ‘একুইটি/ইকুয়ালিটি’ কি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে না? উত্তর হচ্ছে , হুম, করতে হবে, আর সব মানুষ সমান। তবে তারাই আমাদের চোখে ইকুয়ালিটি/একুইটি পেতে পারে যারা আমাদের চোখে আদৌ মানুষ।

আপনার মতামত জানান