আবরার হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত আশিকুল ক্লাসে, দ্বিতীয় দিনেও বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত



শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত আশিকুল ইসলাম বিটুর ক্লাসে অংশ নেওয়ার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে।


আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বুয়েট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। বেলা পৌনে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বুয়েট ভিসি অফিসের সামনে অবস্থান নেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বুয়েট প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়।


এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এ বুয়েটে হবে না’, ‘হত্যাকারীর ঠিকানা, এ বুয়েটে হবে না’, ‘আবরার ফাহাদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘বিটু আবার ক্লাসে গেলে, ক্লাসে ফিরে যাব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।


আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি আশিকুল ইসলাম বিটু ক্লাসে অংশ নেওয়ার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা


এছাড়া শিক্ষার্থীদের হাতে ‘নো ক্যাম্পাস শেয়ারিং উইথ মার্ডারার’, ‘নো প্লেস ফর মার্ডারার ইন বুয়েট’ লেখা সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাস বর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। এই ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবারও তাঁরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ দেখায়।

বুয়েটের বহিষ্কারাদেশের ওপর উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ায় কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে এর আগে ২০২১ সালে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছিলেন আশিকুল।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রায় দুই মাস অচল ছিল বুয়েট। ওই ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি আশিকুল ইসলাম বিটু ক্লাসে অংশ নেওয়ার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি আশিকুল ইসলাম বিটু ক্লাসে অংশ নেওয়ার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ওই হত্যার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে ২৬ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছিল বুয়েট। তালিকার ১৭ নম্বরে ছিলেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬ ব্যাচের আশিকুল ইসলাম বিটু। তবে এ ঘটনায় করা মামলায় আশিকুলকে আসামি করেনি পুলিশ।

এই কারণে বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে আশিকুল আদালতে রিট আবেদন করে। ওই আবেদনে সাড়া দিয়ে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বুয়েট কর্তৃপক্ষের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেন হাই কোর্ট। আশিকুল ওই স্থগিতাদেশ নিয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ তাঁকে ক্লাসে ফেরার অনুমতি দেয়।

এরপর ওই বছর ২২ মে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করেন তিনি। আর সম্প্রতি তিনি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের সঙ্গে আরেকটি ক্লাসে তিনি যোগ দেন।

আপনার মতামত জানান