উচ্ছেদ নাকি দখলদার পরিবর্তনের পায়তারা

বিশেষ প্রতিনিধি :
উচ্ছেদে সর্বশান্ত এক অসহায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কাঁদতে কাঁদতে বলছে এটা উচ্ছেদ নয়, এটা ষড়যন্ত্র। আমাদের উচ্ছেদ করে দখলদার পরিবর্তন করে টাকা কামানোর ধান্দা। এটা যদি সত্যিকারের উচ্ছেদই হতো তাহলে মিঠাই কেন অক্ষত রইল। ডানবামের সব দোকান উচ্ছেদ হলো কিন্তু মিঠাই ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। এতেই বুঝা যায় উচ্ছেদের জায়গা নতুন কারো কাছে পজিশন বিক্রী করা হবে। তিনি কেঁদে কেঁদে আরো বলেন, সামনে ঈদ, অনেক ঋন করে দোকান নিয়েছি আজ ভেঙ্গে দিল। আমার পরিবার নিয়ে পথে দাঁড়ানো ছাড়া কোন উপায় থাকল না। এ সময় পাশে দাঁড়ানো আরেকজন বললেন, এ দুনিয়ায় সবাই মিঠাই এর মাছি।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার গ্রিন এন্ড ক্লিন কর্মসূচির আওতায় সোনারগাঁ উপজেলাকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও যানজটমুক্তকরণের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৬ ঘন্টাব্যাপী সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সরকারি জায়গায় গড়ে উঠা সকল অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এসময় বিভিন্ন দোকান, ফার্মেসীসহ প্রায় ১ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
জনগণের দাবী, উচ্ছেদ যেন দখলদার পরিবর্তন কিংবা নতুনভাবে পজিশন বিক্রির জন্য না হয়। উচ্ছেদ হউক পথচারী, জনগণসহ সাধারন মানুষের কল্যাণের জন্য। আজ না হয় কাল আবারো হয়তো দখল হবে। আমরা বিগত দিনগুলোতে দেখেছি প্রতিবছরই উচ্ছেদ অভিযান চলে এবং কয়েকদিনের মধ্যে তা আবার দখলও হয়ে যায়। সবাই দেখে আসছে উচ্ছেদ মানেই দখলদার বদলানো। উচ্ছেদ হওয়া এক দোকান মালিক জানিয়েছেন, নতুন ডিসি, ইউএনও ছাড়াও প্রশাসনের উধ্বতন কর্মকর্তারা যোগদানের পরই উচ্ছেদ শুরু হয়। পরে দখলদার তাদের কথা বলে নতুন ভাবে দখল দেয়। যখন দখল দখল দেয় তখন প্রশাসন নিরব থাকায় আমরা বুঝি প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই পজিশন বিক্রী শুরু করেছে। প্রতিটি পজিশন ৫০ হাজার থেকে এককালীন ৫ লাখ টাকায় নিতে হয়। তারা জানান, অসহায ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করলেও দখলদারদের বিরুদধে কোন পদক্ষেপ নেন না সরকার।
তবে, উপজেলা প্রশাসন এর এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।অবৈধ দোকান কিংবা কোন স্হাপনা নির্মাণে যদি কেউ উপজেলা প্রশাসন এর নাম করে আর্থিক লেনদেন করে থাকে তাহলে অবিলম্বে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।তাছাড়া অবৈধ দোকান স্হাপনে সহায়তাকারী সম্পর্কে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিঠাইয়ে উচ্ছেদ না চালানোর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, মিঠাইয়ের সাথে সওজের একটি মামলা চলমান এবং হাইকোর্টর ষ্টেঅর্ডার থাকায় তা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। আদালতকে সম্মান জানিয়ে, এ ব্যাপারে মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
দিনব্যাপী এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মঞ্জুরুল মোর্শেদ,সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেগুফতা মেহনাজ,সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুর রহমান, কাচঁপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা।এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আনসার সদস্যসহ ৫০ জন গ্রাম পুলিশের সদস্যবৃন্দ।উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগী হিসেবে ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যগণসহ পল্লী বিদ্যুতের কর্মীগণ।
আপনার মতামত জানান