বঙ্গবন্ধুর খুনীর লাশের জায়গা সোনারগাঁয়ে হবে না
ডেইলি সোনারগাঁ >>
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
লাশ দাফনে ভোলায় স্থানীয়দের কঠোর আপত্তি থাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি আব্দুল মাজেদের লাশ ভোলার বদলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে দাফন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। জেল কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানায়, মাজেদের লাশ তার শ্বশুরবাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকায় দাফন করা হবে। (সুত্র-ইত্তেফাক) এ খবরে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ সহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা রাত জেগে সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন কবরস্থান পাহাড়া দিচ্ছেন বলে জানান।তারা জানান, খুনি মাজেদের শ্বশুড়বাড়ি সোনারগাঁয়ের কোথায় তা না জানায় বিক্ষিপ্তভাবে পুরো সোনারগাঁয়ের কবর স্থান নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান বলেন, সরকারের কাছে আমাদের প্রাণের দাবী জাতির আদর্শের খুনি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুনী, ছোট্কুট রাসেলের অমানবিক কুখ্যাত খুনি কুলাঙ্গার মাজেদের লাশ যাতে সোনারগাঁয়ের মাটিতে কবর দিতে না পারে এজন্য আমরা সদা সোচ্চার। যে পবিত্র মাটিতে লক্ষ লক্ষ অলি-আউলিয়া, গাউস-কুতুব, ইসলামী চিন্তাবিদ, শতশত মুক্তিযোদ্ধা ও হাজার হাজার মুজিব বক্তের জন্ম, সে মাটিকে আমরা কলঙ্কিত হতে দিবো না।
এদিকে সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাসেল মাহমুদ জানান, পিতার খুনির লাশ আমরা সোনারগাঁয়ে দাফন করতে দিব না। জাতির জনকের খুনিকে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ কোনভাবেই বুকে টেনে নিবে না, প্রয়োজনে মৃত্যুকে বুকে টেনে নিবো আর যদি লাশ দাফন করে ফেলে সে লাশ সোনাারগাঁয়ের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের নেতৃত্বে উপরে ফেলে দিয়ে প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় ফাসির মঞ্চে দাঁড়াবো। তবু খুনির লাশের জন্য সোনারগাঁয়ে একবিন্ধু জায়গা দিব না।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আজিজুল ইসলাম মুকুল বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনির লাশ সোনারগাঁয়ে দাফন হবে না, আর তা যদি হয় বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরণের পর পর (যদি বেঁচে থাকি) সোনারগাঁয়ের মাটিতে থাকবেনা! মুজিব আদর্শের সৈনিকেরা তা সোনারগাঁ রাখবে না ইনশাআল্লাহ!
সোনারগাঁয়ের পবিত্র মাটিকে কলংকিত করেছে যারা তাদেরও বিচার হবে-
শ্রমিকলীগ নেতা সৈয়দ মশউর রহমান শামীম বলেন, খুনি মাজেদ কে সোনারগাঁয়ে দাফন কেন? আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং জাতির জনকের হত্যাকারীর লাশ সোনারগাঁয়ে রাখবো না ইনশাআল্লাহ জয়বাংলা
মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহের নিগার সনিয়া জানান, পিতার খুনি মাজেদের কলংক সোনারগাঁ বইবে কেন? মানিনা মানব না। যদি গোপনে হয়ে থাকে সোনারগাঁও থেকে অপসারণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খিুনিকে সোনারগাঁয়ে কোন ভাবেই দাফন করতে দেয়া হবে না। প্রশাসন যদি রাতের আঁধারে লাশ দাফন করে থাকে তাহলে সোনারগাঁয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা সে কলঙ্কিত লাশ তুলে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দিবে।
ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ ২৩ বছর ধরে কলকাতায় আত্মগোপনে ছিলেন। করোনা পরিস্থিতে সম্প্রতি তিনি ঢাকায় আসেন। এরপর গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টার পর রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
আদালত থেকে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর মাজেদ শেষ সুযোগ হিসেবে নিজের দোষ স্বীকার করে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন। সেই আবেদন গত বুধবার রাতে খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি।
গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ যাওয়ার পর তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পুরো প্রস্তুতি নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। এর পর রাতে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
আপনার মতামত জানান