নির্বাচনি সংঘর্ষে হাসপাতালে ১৬ জন
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংসতায় সাংবাদিকসহ ১৬ জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগের দিন শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ এই আহতের ঘটনা ঘটে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, গতকাল রাত ১২টা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আহতদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদের বেশিরভাগই ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। এছাড়া দুজন ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন, তাদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ডেমরা কোনোপাড়ার ৬৪, ৬৫ ও ৬৬ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আনারস মার্কার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মনিরা চৌধুরী, তার স্বামী আতিকুর রহমান, ছোট ভাই মাসুম চৌধরী ও তার সমর্থক রাসেলকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নিলুফার ইসলামের (মোবাইল মার্কা) সমর্থকরা কিল-ঘুষি মেরে আহত করে। রাত আড়াইটার দিকে তাদের ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসা শেষে রাতেই তারা হাসপাতাল থেকে চলে যান।
সকালে তেজগাঁও নাখালপাড়ার শাহিনবাগ সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মঞ্জুর সমর্থকের ইট-পাটকেলের আঘাতে ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন কাঞ্চনের সমর্থক সাখাওয়াত হোসেন খোকন (৪৫) মাথায় আঘাত পেয়েছেন। একই ঘটনায় মঞ্জুর সমর্থক আ. মালেকও (৬২) আহত হন।
সাখাওয়াত হোসেনের অভিযোগ, কেন্দ্রে ঢুকতে চাইলে তাদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়া হয়।
কাঠালবাগান এলাকার খান হাসান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মারধরের শিকার হয়ে বিএনপির কাউন্সিলর সমর্থক দুইজন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদেরকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আহতরা হলেন আতিক (৩৫), তার মাথায় আঘাত লেগেছে। এছাড়া নাসির উদ্দিন (৩৩) নামে একজনের শরীরে কিল-ঘুষির আঘাত রয়েছে।
সেগুনবাগিচা আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট খলিলুর রহমানকে (৩২) ঢুকতে না দিয়ে মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে।
এছাড়া লালমাটিয়া মহিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে ভোর ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর ২৯, ৩০ ও ৩২ নং মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রুজি জয়ীতার (হেলিকপ্টার মার্কা) পোস্টার লাগানোর কাজ করার সময় ৩২ নং ওয়ার্ডের হাসানুল ইসলাম রাষ্ট্রন (ঠেলাগাড়ী মার্কা)-এর লোকজনের ছুরিকাঘাতে রনি (১৭) ও শিপন (১৯) জন আহত হয়। তাদের বাম হাতে এবং মুখমণ্ডলের ছুরির আঘাতের জখম রয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) মোহাম্মদপুর এলাকায় নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের সময় আহত হয় সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন (৩২)। তার মাথায় আঘাত রয়েছে। সে বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এছাড়া উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টর এলাকায় ভোটকেন্দ্রে আহত হয় দুজন। তারা হলেন মিরাজ (৩৫) সাদ্দাম হোসেন (২৫)।
যাত্রাবাড়ি ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে ইদ্রিস আলী (৩০) নামের একজন আহত হয়। সে আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে দাবি করে। যাত্রাবড়ি ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে আহত হয় সাগর (২৩) নামের এক যুবক। সে জাতীয় পার্টির সমর্থক বলে দাবি করেন।
দুপুরে আজিমপুর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচন কেন্দ্রে আহত হয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের হোসেন শ্যামল (২৫)। তার দাবি বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেন।
আপনার মতামত জানান