সাংবাদিকের ওপর হামলা, মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশিত

খুলনায় কর্তব্যরত অবস্থায় একাত্তর টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান রকিব উদ্দিন পান্নু, ক্যামেরা পারসন আরিফ হোসেন সোহেলের ওপর হামলা ও ক্যামেরা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। খুলনা ওয়াসার পাইপলাইন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক সদস্যের সহায়তায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে খুলনার কর্মরত সাংবাদিক জোড়াগেট সংলগ্ন খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে সিটি মেয়র তালুকতদার আব্দুল খালেকের আশ্বাসে সাংবাদিক কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। এ ঘটনায় খালিশপুর থানায় সাংবাদিক রকিব উদ্দিন পান্নু বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

আজ রবিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জোড়াগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সাংবাদিক রকিব উদ্দিন পান্নু বলেন, জোড়াগেট এলাকায় ওয়াসার পাইপ লিকেজ হয়ে পানি বের হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে মোবাইলে ওই চিত্র ধারণ করছিলাম। এ সময় কর্মরত খুলনা ওয়াসার পানি সরবরাহ প্রকল্পের চায়না প্রকৌশলী আকষ্মিকভাবে আমাকে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তখন আমি ওই কর্মকর্তাদের নিজেকে বার বার সাংবাদিক বলে পরিচয় দিলেও তারা থামেনি। আমি বার বার বলি ‘স্টপ, প্লিজ আই এম জার্নালিস্ট’। এক পর্যায়ে ক্যামেরাম্যান আরিফুর রহমান সোহেলের ওপরেও হামলা চালায় ঠিকাদারের লোক ও পুলিশ। হামলাকারীরা ক্যামেরাম্যানের ক্যামেরা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আবুল বাশার এসে ওয়াসার পক্ষ নিয়ে আমাকে উল্টো হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নিজে মারধর করে ও ওয়াসার লোকজনদের মারধরে সহযোগিতা করে। পরে পুলিশ আমাকেই থানায় নেওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে আমাকে ছেড়ে দেয়।

এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষুদ্ধ সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছণার বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। তারা দ্রুত এ ঘটনায় দায়ী ওয়াসার দেশি-বিদেশি ঠিকাদার, কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুন্সী মাহবুব আলম সোহাগ। বক্তব্য দেন খুলনা প্রেস ক্লাব সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি এস এম হাবিব, সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সাহেব আলী, প্রবর্তন সম্পাদক মোস্তফা সরোয়ার, খুলনাঞ্চল সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলটন, সময়ের খবর সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সাঈয়েদুজ্জামান সম্রাট, এমইউজে নেতা হাসান আহমেদ মোল্লা, রাশিদুল ইসলাম, সাংবাদিক কৌশিক দে, ফটো সাংবাদিক বাপ্পী খান প্রমুখ।

পরে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। খুলনা সিটি মেয়র এসময় দোষী পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রবিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার সোনালী সেন, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ কেএমপির পুলিশ কর্মকর্তারা।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, ইন্সপেক্টর আবুল বাশারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যামেরা ভাঙচুর বিষয়ে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে।

খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম বলেন, সাংবাদিক পান্নুর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। দোষীদের ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না।

আপনার মতামত জানান