শ্রীবরদী পৌরসভার বেহালদশা, ঈদ কেনাকাটায় দুর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত

প্রায় সাড়ে ১৪ বছরের পুরোনো শেরপুরের শ্রীবরদী পৌরসভা। এখনো নানা সমস্যায় জর্জরিত। পৌরসভায় আরেক নাম হয়েছে জনদুর্ভোগ। শহরের অলিগলি আর সড়কে জমে ওঠেছে কাঁদা। সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এতে বাড়ছে দুর্ভোগের মাত্রা। সম্প্রতি ঈদকে কেন্দ্র করে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন- ব্যবসায়ী, ক্রেতা বিক্রেতা ও পথচারীরা। এই দুর্ভোগ এড়াতে ঈদের কেনাকাটা করতে কেউ ছুটছেন জেলা শহর বা পার্শ্ববর্তী বকশিগঞ্জ উপজেলা শহরে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পৌরশহরের ব্যবসায়ীরা। রবিবার সরেজমিন গেলে দেখা মেলে এমন চিত্র। এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে দাবি তুলেন পথচারী, ব্যবসায়ী, ক্রেতা বিক্রেতা ও স্থানীয়রা।

জানা যায়, শ্রীবরদী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। অথচ এখনো রয়েছে শহরের নানা সমস্যা। নেই কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা। তবে কয়েক বছর পর পর ড্রেনেজ ব্যবস্থার নামে ব্যয় লাখ লাখ টাকা। কিন্তু বছর না গড়াতেই ওইসব ড্রেন চাপা পড়েছে মাটির নিচে। বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। কাঁদা আর বৃষ্টির পানিতে একাকার হয় শহরের অলিগলি। শহরের নর্দমায় দূষিত হয় পরিবেশ। প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগের শিকার হন পৌরবাসীসহ ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারীরা।

সরেজমিন গেলে দেখা যায়, পৌর শহেরর প্রাণকেন্দ্র চার রাস্তা মোড়ে ভায়াডাঙ্গা সড়ক, মধ্য বাজারের পানহাটি, কলাহাটি, মাছ বাজার, রাধা গোবিন্দ মন্দিরের সামনের রাস্তা, সাব রেজিষ্ট্রি অফিস হতে কাঁচা বাজার, সোনালি ব্যাংকের সামনের সড়ক, অগ্রণী ব্যাংক থেকে কাঁচা বাজার, পশ্চিম বাজারের মাছ বাজার, মাংস বাজার, শুটকি বাজার, কাঁচা মালের আড়ৎ, কামিল মাদরাসা ও হাফিজিয়া মাদরাসায় যাওয়ার সড়কে কাঁদা আর নর্দমায় হাটা চলার করতে পারছে না পথচারীরা। এতে কাদা, আবর্জনা ও ময়লার জমে যানবাহন চলাচলও কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ সড়কগুলোতে ময়লা আবর্জনা আর জলাবদ্ধতার কারণে চলাচল করতে পারি না। ময়লার দুর্গন্ধ্যে হাটা চলা করাও কঠিন। কাঁচামাল ব্যবসায়ী ছাদেক আলী, আবুল হোসেন, জামাল মিয়া, মাছ ব্যাবসায়ী হামিদুর, সাইদুর, আলাল মুন্সী ও মাংস বিক্রেতা আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে জানান, ময়লা আবর্জনা ও জলাবদ্ধতার কারণে এই বাজারে দিন দিন ক্রেতাশুন্য হয়ে পড়ছে। এতে তাদের ব্যবসার লোকসান পোহাতে হচ্ছে।

দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ সড়কটি নির্মাণের দাবি তুলে ডেমোক্রেসি ফর ইন্টারন্যাশনাল সংস্থার শ্রীবরদী ফেলো ফজলুল হক চৌধুরী অকুল বলেন, নাকে রুমাল চেপেও বাজার করতে পারি না। এভাবে চলতে থাকলে এখানকার ব্যবসায়ীরা ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হবে। এ জন্য ডেমোক্রেসি ফর ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে দ্রুত সড়ক নির্মাণ ও বর্জ্য অপসারণের দাবি তুলে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। ড্রেনের পানি ও ময়লা-আবর্জনা অপসারণের কোনো ব্যবস্থা নেই বলে উল্লেখ করে পৌরসভার মেয়র আবু সাঈদ বলেন, বর্তমানে কাঁচা বাাজারের অভ্যন্তরের সড়ক ও ড্রেন নির্মাণে কোনো বরাদ্দ নেই। তাছাড়া এর আগে কাঁচা বাজারের সেড নির্মাণের টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাধা দেওয়ায় ওই টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর বরাদ্দ পেলে কাঁচা বাজারের সড়ক নির্মাণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও ময়লা আবর্জনা অপসারণের কাজ করা হবে।

আপনার মতামত জানান