জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলারাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা ৮০০ থেকে ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক সাংবাদিকদের জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা চারটি মামলার মধ্যে একটি ট্রাফিক পুলিশের একজন সার্জেন্ট বাদী হয়ে করেছেন। বাকি তিনটি মামলা করেছেন শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ সদস্যরা।
ওসি বলেন, “চারটি মামলার সবকটিতেই আসামিরা অজ্ঞাত। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে—সন্ত্রাসী, নাশকতাকারী, ফ্যাসিবাদী মতাদর্শের অনুসারী, অনিষ্টকারী ও জনস্বার্থবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত ব্যক্তিরা এই সহিংসতায় জড়িত ছিল। একটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আন্দোলনকারীরা জোরপূর্বক সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করেছে। অন্য মামলাগুলোর অভিযোগ—পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর এবং পুলিশ কন্ট্রোল রুমে অগ্নিসংযোগ।”
তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নাম রিমন চন্দ্র বর্মণ।
এর আগে, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভে নামে ‘জুলাই যোদ্ধা’ ব্যানারে একটি দল। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল—তিনটি নির্দিষ্ট প্রস্তাব সনদে অন্তর্ভুক্ত করা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুর দেড়টার দিকে সংসদ ভবনের ১২ নম্বর গেট এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের প্রথম দফা সংঘর্ষ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের একটি অংশ গেট ভেঙে সংসদ ভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এরপর ভেতরে থাকা আরেকটি অংশ বাইরে এসে যোগ দেয়। একপর্যায়ে উত্তেজনা বাড়ে, এবং আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতল ও চেয়ার ছোড়ে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছোড়ে। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারীরা রাস্তায় আগুন ধরিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। সংঘর্ষে কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের কিছু মানুষ আহত হন বলে জানা গেছে। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের কয়েকটি গাড়িও।
ঘটনার পর সংসদ ভবনের আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাড়ানো হয় নিরাপত্তা। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুলিশ বলছে, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আরও আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


আপনার মতামত জানান