যুক্তরাজ্যে লরির ধাক্কায় এক বাংলাদেশি তাঁর দুই সন্তান নিহত
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :
যুক্তরাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী ও তাঁর দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে লেস্টারশায়ারের হিকিনলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত আলমগীর হোসেন সাজু (৩০) হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের কুর্শি ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল কালামের ছেলে বলে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী বুলবুল জানান।
তিনি বলেন, আলমগীর হোসেন সাজু বার্মিংহামের কাছে ওয়ালসালের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি স্থানীয়দের মধ্যে বেশ শ্রদ্ধাভাজন। তাঁদের মৃত্যুতে কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম ও নিহতের স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, আলমগীর বার্মিংহাম শহরের কাছে ওয়ালসালের প্লেক শেরিডান স্ট্রিটের বাসিন্দা। সপরিবারে এক দিনের সফরে বার্মিংহাম থেকে লেস্টারশায়ারের গিয়েছিলেন। গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফেরার পথে তাঁদের বিএমডব্লিউ গাড়ির ধাক্কা লাগে। এতে গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই সাজু ও তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মেয়ের মৃত্যু হয়। তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী স্থানীয় হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল বলেন, ‘আলমগীর যখন ছোট ছিল, তখন দুবার বাংলাদেশে আসে। এরপর দীর্ঘসময় অতিক্রম হলেও বাংলাদেশে আসেনি। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’
কুর্শি ইউনিয়নের কাদমা গ্রামের বাসিন্দা ও নিহত আলমগীরের আত্মীয় জাকির হোসেন বলেন ‘নিহত আলমগীর সপরিবারের দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশে আসেননি। গ্রামের বাড়ি কল্যাণপুরে তাঁদের বাড়ি রয়েছে, তবে সেখানে কেউ এখন আর থাকেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আলমগীরের এক চাচা আবুল হোসেন দুলা ছিলেন। তিনি প্রায় এক বছর আগে মারা যান। তাঁর অন্য চাচারা যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। হঠাৎ আলমগীর ও তাঁর ছেলে-মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা হতভম্ব হয়ে গেছি।’
উপজেলার কুর্শি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান বলেন, ‘কল্যাণপুর গ্রামের আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। তিনি সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় আলমগীর তাঁর ছেলে-মেয়ের মৃত্যুর সংবাদে আমরা শোকে কাতর। দুর্ঘটনায় আলমগীরের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী গুরুতর জখম পেয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে।’ তিনি আলমগীর, তাঁর ছেলে-মেয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
আপনার মতামত জানান