নবীজি (সা.)-এর মেজবান
হিজরতের পর যাঁরা নবীজি (সা.)-এর মেজবান হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম কুলসুম (রা.)। তাঁর বাবার নাম আল-হিদম। তিনি মদিনার বিখ্যাত আউস গোত্রের বনু আমর ইবনে আওফ শাখার সন্তান। তিনি একজন বয়স্ক ও স্বভাবভদ্র ব্যক্তি। রাসুল (সা.)-এর মদিনায় আগমনের আগেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। মদিনার উপকণ্ঠে ‘কুবা’ এলাকায় ছিল তাঁর বাড়ি।
রাসুল (সা.) মক্কা থেকে হিজরত করে আবু বকর (রা.)সহ সর্বপ্রথম তাঁর বাড়িতে গিয়ে উঠেন। সেখানে চার দিন মতান্তরে ১৪ দিন থাকার পর মদিনার মূল ভূখণ্ডের পথ ধরেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর উষ্ট্রী যেখানে গিয়ে যাত্রা বিরতি করবে সেখানেই অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন। উষ্ট্রীটি আবু আইয়ুব আল-আনসারি (রা.)-এর বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ালে রাসুল (সা.) উষ্ট্রী থেকে অবতরণ করেন এবং তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করেন। নিজস্ব ঘরবাড়ি তৈরি হওয়া পর্যন্ত বেশ কিছু দিন সেখানেই অবস্থান করেন।
এভাবে বহুসংখ্যক মুহাজির সাহাবি কুলসুম ইবনে হিদম (রা.)-এর বাড়িতেই প্রাথমিকভাবে অবস্থান করেন। কুলসুম (রা.) তাঁদের আন্তরিকতার সঙ্গে বরণ করেন, আশ্রয় দেন এবং যথাযথ আপ্যায়ন করেন। তাঁদের কয়েকজনের নাম এখানে উল্লেখ করা হলো—
যেসব সাহাবি তাঁর বাড়িতে মেহমান হয়েছেন
আবু উবাইদাহ ইবনে জাররাহ (রা.), মিকদাদ ইবনে আমর (রা.), খাব্বাব ইবনে আরাত্ত (রা.), বাইজার দুই পুত্র সুহাইল ও সফওয়ান (রা.), ইয়াজ ইবনে জুহাইর (রা.), আব্দুল্লাহ ইবনে মাখরামাহ (রা.), ওয়াহব ইবনে সাদ ইবনে আবু সারহ (রা.), মামার ইবনে আবু সারহ (রা.), আমর ইবনে আবু আমর ফিহরি (রা.), উমাইর ইবনে আউফ (রা.) [সুহাইল ইবনে আমরের আজাদকৃত দাস]। তাঁরা সবাই বদরি সাহাবি।
রাসুল (সা.)-এর মেজবান সৌভাগ্যবান বয়স্ক এই সাহাবি কুলছুম ইবনে হিদম (রা.) রাসুল (সা.)-এর হিজরতের পর বেশি দিন জীবিত ছিলেন না। বদর যুদ্ধের অল্প কিছু দিন আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন। এক বর্ণনামতে, রাসুল (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর সর্বপ্রথম ইন্তেকাল করেন এই কুলসুম ইবনে হিদম (রা.)। তখন সবেমাত্র মসজিদে নববীর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। (তথ্যসূত্র : আত তাবাকাতুল কুবরা : ৩/৪৬৭-৪৬৮; আল-ইসতিআব ৩/১৩২৭-১৩২৮)
আপনার মতামত জানান