ঋণ আদায়ে ব্যাংকের প্রাইম গ্রাহককে মারধর

প্রকাশিত

প্রবাসী নুরুল আলম। নুরুল আলম ও ফাতেমা আক্তার দম্পতি প্রাইম ব্যাংকের ঢাকার যাত্রাবাড়ী শাখা থেকে ২০১১ সালের অক্টোবরে ৫০ লাখ টাকা ঋণ নেন । প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি ছিল ৯০ হাজার টাকা। নুরুল আলম থাকেন সৌদি আরবে, ঋণ নেওয়ার সময় দেশে এসেছিলেন। ২০১১ থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তাঁরা ১ কোটি ৭ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে করোনা শুরু হলে ঋণের কিস্তি পরিশোধ বন্ধ করে দেন। এরই মধ্যে কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সৌদি সরকার নুরুল আলমকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে করোনার মধ্যে প্রাইম ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা ঋণ পরিশোধের জন্য বারবার চাপ দেয়। তবে তাঁরা কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি।

গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর স্ত্রী ফাতেমা আক্তার ও ছেলে ইব্রাহিম আলমকে নিয়ে প্রাইম ব্যাংকের মতিঝিলের প্রধান কার্যালয়ে যান ব্যাংকটির গ্রাহক ও সৌদি প্রবাসী নুরুল আলম। সেখানে আলোচনার একপর্যায়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নুরুল আলমকে মারধর করেন। এরপর অজ্ঞান হয়ে পড়লে নুরুল আলমকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।


নুরুল আলম জানান, ব্যাংক থেকে ডাকা হলে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি তাঁর স্ত্রী ফাতেমা আক্তার ও ছেলে ইব্রাহিম আলমকে নিয়ে ব্যাংকের মতিঝিলের প্রধান কার্যালয়ে যান। সেখানে আলোচনার একপর্যায়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নুরুল আলমকে মারধর করেন। এরপর অজ্ঞান হয়ে পড়লে নুরুল আলমকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, তাঁর গায়ে মারধরের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

এ ঘটনার পর নুরুল আলম ও ফাতেমা আক্তার দম্পতিকে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনের আশ্রয় না নেওয়া আহ্বান জানায় এবং সুদ মওকুফের জন্য আবেদন করার মৌখিক প্রস্তাব দেয়। সেই অনুযায়ী গ্রাহক দুই দফা আবেদন করলেও ব্যাংক তা নাকচ করে দেয়।
নুরুল আলম বলেন, ‘আমি ১৯৮৭ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরবে ছিলাম। সৌদি থেকে আমি ঋণের ১ কোটি ৭ লাখ টাকা পাঠিয়েছি। দেশে এসে গত ১৯ সেপ্টেম্বর পরিবার নিয়ে ব্যাংকে যাই। এ সময় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা আপত্তিকর ভাষায় আমার স্ত্রীকে গালিগালাজ করেন। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি ৩৩ বছর বিদেশে ছিলাম। ব্যাংক কেন গ্রাহককে মারধর করবে। ব্যবস্থা নিতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেবে। আমি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’


ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা নুরুল আলমের ছেলে ইব্রাহিম আলম একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, ‘সেদিন কী হয়েছিল, ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই সব বের হবে। বাবাকে এমন মারধর করা হয়েছে যে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। আমি তাঁদের করজোড়ে অনুরোধ করলেও তাঁরা বাবাকে ছাড়েননি। পরে ব্যাংক কর্মকর্তারাই অ্যাম্বুলেন্স ডেকে বাবাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন।’

প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান ও রশীদ বলেন, গ্রাহক নিজেই ব্যাংকের ফ্লোরে শুয়ে পড়েন। এ ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। গ্রাহকের সঙ্গে কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করা হয়নি, মারধরের প্রশ্নই আসে না।

সুত্র: প্রথম আলো

আপনার মতামত জানান