আশামনির চিঠির সেই তামিম গ্রেপ্তার

প্রকাশিত



জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার স্কুলছাত্রী আশামনির আত্মহত্যা মামলার একমাত্র আসামি তামিম আহমেদ স্বপনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪। শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অষ্টধর ইউনিয়নের চরশশা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।


আজ শনিবার দুপুরে তাকে মেলান্দহ থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। মেলান্দহ থানার পুলিশ শনিবার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করলে আশামনিকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে তামিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেলান্দহ থানার ওসি।

তামিম জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার সাধুপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মো. খোকা মোল্লার ছেলে। ভিকটিম আশামনি একই উপজেলার মেলান্দহ পৌরসভার শাহজাদপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি মো. আবু সাঈদের মেয়ে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, তামিম দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে আশামনিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে ফিরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে খাবার খেয়ে ঘুমানোর কথা বলে নিজ ঘরে যায় আশামনি। ঘুম থেকে না ওঠায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার মা ঘরে গিয়ে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।



খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় মেলান্দহ থানার পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের সময় ওই ঘর থেকে ভিকটিম আশামনির হাতে লেখা দুটি চিরকুট পাওয়া যায়। চিরকুটে সে লেখে, ‘তামিম তার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে।’ এ জন্যই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে তামিম গাঢাকা দেন। শুক্রবার জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে ভিকটিমের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় ভিকটিম মেয়েটির বাবা আবু সাঈদ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তামিমকে আসামি করে শুক্রবার মেলান্দহ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।


র‌্যাবের জামালপুর ক্যাম্পের কম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ‘ঘটনার মাত্র ১৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা আসামি তামিমকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাবের কাছে তামিম আশামনি আত্মহত্যার ঘটনার জন্য দায় স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে মেলান্দহ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম ময়নুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, স্কুলছাত্রী ভিকটিম আশামনিকে আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী তামিম আহমেদ স্বপন খানকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার দুপুরে তাকে মেলান্দহ থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। পরে আজই তাকে জামালপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া আরজু ১৬৪ ধারায় আসামি তামিমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। আসামি তামিম তার জবানবন্দিতে ভিকটিম আশামনিকে আগে থেকেই উত্ত্যক্ত করা এবং ঘটনার দিন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছেন। পরে আদালতের আদেশে আসামি তামিমকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আপনার মতামত জানান