বড় ভাইয়ের নৌকা ঠেকাতে ছোট ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আপন দুই ভাই মনোনয়নপত্র জমা দিলেন। যা ওই ইউনিয়নে ভোটের মাঠে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। এ ছাড়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, দুই সহোদরের একজন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ভাটরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদুল বারী এবারও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত হয়ে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। অপরদিকে, ভাটরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মজনুর রহমান মজনু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বড় ভাইয়ের বিপক্ষে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। ভোটের মাঠে দুই ভাইকেই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছেন ভোটার ও এলাকাবাসী।
নৌকা প্রতীক পেয়ে আগেরবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ভাটরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদুল বারী। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দখলে থাকা এলাকায় নৌকার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। এ কারণেই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা।
ভোটাররা বলছেন, ভোটের মাঠে যা-ই হোক, দুই ভাইয়ের মধ্য থেকেই নির্বাচিত হচ্ছেন ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যান। দুই ভাইয়ের লড়াই এখন পুরো উপজেলায় আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। চায়ের দোকানের আড্ডা থেকে পাড়া-মহল্লায় একই আলোচনা। পারিবারিকভাবে ভাইয়ে ভাইয়ে সম্পর্ক যা-ই হোক, নির্বাচনের মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। ছোট ভাই ভোটারদেরকে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বর্তমান চেয়ারম্যানের ব্যর্থতাও তুলে ধরছেন। আর বড় ভাই নিজের বিগত দিনের উন্নয়নের ফিরিস্তি শোনাচ্ছেন মানুষকে। অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে নৌকায় ভোট চাইছেন।
এই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহেল বাকীও মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। দুই ভাইয়ের কোন্দলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে বিজয় অর্জনের কৌশলে মাঠে নেমেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহেল বাকী।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোরশেদুল বারী বলেন, আমি বিগত সময়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ভাটরা ইউনিয়নে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। সব সময় সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থেকেছি। আমি শতভাগ আশাবাদী, আমার ইউনিয়নের ভোটাররা এবারও নৌকায় ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবে।’ স্বতন্ত্র প্রার্থী মজনুর রহমান মজনু বলেন, এলাকার উন্নয়ন চাইলে মজনুর বিকল্প নেই। ভোটাররা আমার সঙ্গে আছে। আমি অবশ্যই নির্বাচিত হব।’
নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম জানান, চতুর্থ ধাপের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২৯ নভেম্বর, বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ৩০ নভেম্বর থেকে ০২ ডিসেম্বর, আপিলের নিষ্পত্তি ০৩ থেকে ০৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ০৬ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ০৭ ডিসেম্বর এবং ২৬ ডিসেম্বর ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়।
আপনার মতামত জানান