জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ায় নির্যাতনের শিকার ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

প্রকাশিত



নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ ও তার কয়েকজন সমর্থককে বেধড়ক লাঠিপেটার অভিযোগ পাওয়া গেছে।


আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ৬৯নম্বর পশ্চিম মাসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এমপি শামীম ওসমান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ তার সমর্থকরা মাসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করতে থাকেন। এ সময় তারা জয় বাংলা স্লোগান দেন। ওখানকার বর্তমান মেম্বর জাকারিয়া জাকির অভিযোগ তোলেন রিয়াদ লোকজন অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে। পরে কোনো কিছু নির্ণয়ের আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে ছাত্রলীগের ছেলেদের বেধড়ক পিটুনি দেয়। পরে তাদের কয়েকজনকে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে দুপুর তিনটায় ঘটনাস্থলে যান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান। সেখানে যাওয়ার একটি ভিডিও ইতমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানের সামনে বিলাপ করে কেঁদে কেঁদে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা বলছেন, আমাদের কুকুরে মতো পেটানো হয়েছে বিনাকারণে। ছাত্রলীগ করিস কিনা এ কথা জিজ্ঞাসা করে খারাপ ভাষায় গালাগাল করা হয়েছে। এ কথা শুনে শামীম ওসমান এক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্মকর্তাকে বলছেন, এভাবে ছাত্রলীগের সভাপতিকে পেটালেন?


এ বিষয়ে লাঠিপেটায় আহত নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ বলেন, জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার পরেই র‌্যাব আমাদেরকে বলে, তোরা ছাত্রলীগে করিস। কিসের “…” শব্দ ব্যবহার করে ছাত্রলীগ করিস”। কোনো কারণ ছাড়াই আমাদেরকে পেটানো হয়েছে। এভাবে মানুষ মানুষকে মারতে পারে না। জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার পরেই আমাদের ওপর কোনো কিছু না বুঝেই বেধড়ক লাঠিপেটা করে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা বলেন, পুরো জেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে আমরা তাদেরকে নিবৃত করে বিদেশ থেকে নেত্রী আসার পর বাকী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে নেতা কর্মীদের আশ্বস্ত করেছি।

তিনি আরো জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় পুরো জেলায় আন্দোলনের ডাক দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এমপি শামীম ওসমান পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে তাদেরকে নেত্রী আসার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন।


এ বিষয়ে র‌্যাব-১১ সিও লে. কর্নেল তানভীর মোহাম্মদ পাশা জানান, বিষয়টি আমি পুরো জানি না। শুনেছি ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। আমি নরসিংদীতে আছি। ওখানে আমাদের ক্যাম্প কমান্ডার ছিল। ও বিষয়টি বলতে পারবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ র‌্যাব-১১ এর ক্যাম্প কমান্ডার মনিরকে সন্ধ্যার পর থেকে অন্তত ডজনখানেকবার কল দিলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, ওখানে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও র‌্যাব লাঠিপেটা করেছে।

আপনার মতামত জানান