নারায়ণগঞ্জে ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণে দগ্ধ একজনের মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আলেয়া বেগম (৪০) মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দগ্ধরা ভর্তি রয়েছেন। বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে রয়েছেন চিকিৎসাধীন মৃত আলেয়া বেগমের স্বামী হাবিবুর রহমান ও শাশুড়ি সামান্তা বেগম। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানিয়েছেন, তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
বিস্ফোরণে দগ্ধ একজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন সত্যতা জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা বলেন, লাশ দাফনের জন্য পরিবারকে সরকারিভাবে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মৃত আলেয়া বেগম এর মেয়ের জামাই বিপ্লব জানিয়েছেন, মরদেহ দুপুরের মধ্যে গ্রামের বাড়ি খুলনায় নিয়ে যাবে।
গত ২৩ এপ্রিল সকাল ৬টায় ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা জামাই বাজার এলাকায় একটি ৪তলা ভবনের তিন তলার ফ্লাটে গ্যাস বিস্ফোরণে নারী ও শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হয়েছেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় ওই ফ্ল্যাটের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গিয়ে পাশের দোতলা ভবনের ছাদে পড়ে। বিস্ফোরণে ভবনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটের দরজা-জানালার কাচ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া পাশের দোতলা ভবনের দরজা-জানালা ও দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়। দগ্ধরা হয়েছিলেন- হাবিবুর রহমান (৫৬), তার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৪২), তাদের ছেলে লিমন (২০), মেয়ে সাথী (২৫), তাবাসসুম মীম (২২), তার ৩ মাস বয়সী শিশুপুত্র মাহির , নিরাহার (৫৫), তার স্ত্রী শান্তা বেগম (৪০), তাদের ছেলে সামিউল (২৬), তার স্ত্রী মনোয়ারা আক্তার (১৬)। তাদের শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আজ মারা গেলেন আলেয়া বেগম।
বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হওয়া আলেয়া বেগমের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আলেয়া বেগমের স্বামী হাবিবর রহমানের ৮৫ শতাংশ ও শাশুড়ি সামান্তা বেগমের শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁদের দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া সামিউলের শরীরের ১০ শতাংশ, তাবাসসুম মীমের শরীরের ২৫ শতাংশ, মীমের ৩ মাস বয়সী ছেলে মাহিরের ২০ শতাংশ, লিমনের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁরা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, বিস্ফোরণে দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে আলেয়া বেগমের মৃত্যু হয়েছে। অন্যরা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। মৃত নারীর লাশ বার্ন ইউনিটের মর্গে রাখা হয়েছে। স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
গত শুক্রবার ভোরে শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার তিনতলা ভবনের ফ্ল্যাটবাড়িতে গ্যাসের লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে এক শিশুসহ দুটি পরিবারের ১১ জন দগ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে শিশুসহ সাতজনকে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
আপনার মতামত জানান