বাগদাদের করোনা হাসপাতালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ৮২
বাগদাদের একটি কোভিড-১৯ হাসপাতালে রোববার ভোরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত বেড়ে কমপক্ষে ৮২ জন এবং ১১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইরাকের জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইবনে খতিব হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, একটি অক্সিজেন ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণের ফলে হাসপাতালে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বাগদাদের নাগরিক প্রতিরক্ষা কর্মীরা জানিয়েছেন, আগুনের শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুরো হাসপাতালে। কারণ, হাসপাতালটিতে যথাযথ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না এবং ফলস সিলিংয়ের কারণে আগুনের শিখা অত্যন্ত দাহ্য বস্তুর মাধ্যমে দ্রুত পুরো হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়েছিল।
হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন আহমেদ জাকি নামের এক ব্যক্তির দাদা। অগ্নিকাণ্ডের সময় জাকি হাসপাতালেই ছিলেন। তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, আগুন লাগার পর রোগীরা জানালা দিয়ে লাফিয়ে বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুন এতই দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে, অনেকেই ভেতরে আটকা পড়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি আরও জানান, ‘প্রথমদিকে একটি বিস্ফোরণ হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়। মানুষ এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং আতঙ্কিতদের মাঝে একদল চিকিৎসকও ছিলেন।’
এই ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি করা হয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাদিমি দুঃখ প্রকাশ করে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বাগদাদ স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালককে বরখাস্ত করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পৃথক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইবনে আল খতিব হাসপাতালের পরিচালক, প্রকৌশলী ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করেছেন।
তিনি বলেছেন, এটা কোনো ভুল নয়, অবহেলার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফলে এটা এমন একটা অপরাধ, অবহেলার জন্য দায়ী সব পক্ষকেই দায় নিতে হবে। একজন উদ্ধারকর্মী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, আগুনে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট পুরোটাই তছনছ হয়ে গেছে, যেখানে ৩০ জন রোগীর চিকিৎসা চলছিল। ভিন্ন এক বিবৃতিতে সরকারি মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, রীতিমতো কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের বিরুদ্ধে মারাত্মক অপরাধ। এ ধরনের অবহেলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। সূত্রঃ যুগান্তর।
আপনার মতামত জানান