স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও জায়গা হচ্ছে না ডায়রিয়া রোগীদের

প্রকাশিত

বরগুনার বেতাগীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জনবল ও স্থান সংকট, আইভি স্যালাইনের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কম্পাউন্ড, মেঝে ও সিঁড়িতেও স্থান সংকুলান হচ্ছে না।

আজ সকাল (২০ এপ্রিল) ৯ টা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় নতুন করে বলইবুনিয়ার আহম্মেদ হাওলাদারসহ (৬৫) গত ৪ দিনে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৮ জন ডায়রিয়া রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪১ জন। ভর্তি আছেন ৮৭ জন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স ছবি মণ্ডল বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকে গড়ে প্রতিদিনই ৫০-৬০ জন মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কমপ্লেক্স ভর্তি হচ্ছেন। তবে প্রতিদিন সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বেসরকারি হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। করোনা আতঙ্ক ও এমনিতেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জায়গা নেই। অনেকেই বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জায়গার অভাবে শয্যার বাইরে বারান্দায় বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন উপজেলার লক্ষ্মীপুরা গ্রামের শিশু মুবিন।’

শিশু মুবিনের মা আয়শা বেগম বলেন, এখানে দুর্ভোগের শেষ নেই। চিকিৎসকরা কাকে রেখে কাকে দেখবেনে বলাই মুশকিল। ছেলের আশঙ্কা জনক অবস্থা তাই না থেকে উপায় নেই।

এরই মধ্য আইভি স্যালাইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বাইরের ফার্মেসি থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর জন্য স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। এই সুযোগে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কম্পানির লোকজন চড়া দামে কলেরা স্যালাইন বিক্রি করছে এ ধরণের অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত ওষুধ ও সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ইতোমধ্যে বরগুনার মহিলা সংসদ সদস্য নাদিরা সুলতানার পক্ষ থেকে ৩ শত এবং বেতাগী উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৩ শত কলেরা স্যালাইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ অধিদপ্তর ৭ হাজার কলেরা স্যালাইন এবং ৩০ হাজার ওআরএস বরাদ্দ দিয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রলায়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন। তবে কবে নাগাদ এসব স্যালাইন পৌঁছবে তা এখনো নিশ্চিত নয় জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তেন মং।

ভুক্তভোগীরা জানায়, এখন চড়া দামেও স্যালাইন মিলছে না। বেতাগী পৌর শহরের পাইকারী ঔষুধ বিক্রেতা রনজিৎ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘গত মঙ্গলবার থেকে ৪-৫ দিন ধরে আইভি স্যালাইনের তীব্র সংকট চলছে।’

স্যালাইনের জন্য মানুষ বিভিন্ন ফার্মেসিতে ঘুরছে। উল্লেখযোগ্য কম্পানির বরিশাল ডিপোতেও চাহিদাপত্র দিয়েও স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। কষ্টের কথা স্যালাইনের সংকট থাকায় এর আগেও যার পাঁচটি দরকার ছিল তাঁকে ১টি দিয়ে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। সুত্রঃ কালেরকণ্ঠ।

আপনার মতামত জানান