সোনারগাঁয়ে যন্ত্রে পিষ্ট প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ পিঠাওলির পুল
সোনারগাঁয়ে সুলতানী আমলে নির্মিত শের শাহ সেতুটি (পিঠাওলির পুল) ভেকু দিয়ে ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। ষোল শতকে নির্মিত প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ হিসেবে পরিচিত এ সেতুটির অনেকাংশ ভেঙ্গে ফেলায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিন সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কম্পানীগঞ্জ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা কেটে একটি কম্পানী ১৬ ইঞ্চি পাইপ বসিয়ে তিতাস গ্যাসের সংযোগ নিচ্ছে। তারা উপজেলার দৈলেরবাগ তিতাস গ্যাসের সাব ট্রান্সমিশন থেকে টিপুরদী পর্যন্ত গ্যাস সংযোগ নিতে মোগরাপাড়া থেকে থানা রোডের প্রায় ২ কিমি রাস্তা কেটে পাইপ বসাচ্ছে। রাস্তা খোড়াখুড়ির সময় বেকুর আঘাতে পুলটির দক্ষিন দিকের রেলিং ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায়।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, তারা কারো কোন বাধাই মানেনি। হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করে একটি কম্পানীর জন্য কাজ করছে সওজ ও তিতাস কম্পানী।
স্থানীয় প্রবীন ও সোনারগাঁয়ের ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুগল আমলে এ সড়কটি সড়ক-ই-আজম নামে পরিচিত ছিল। সোনারগাঁয়ের সাথে ভারতবর্ষের সাথে যোগাযোগের একমাত্র এ রাস্তায় ১৫৪০-১৫৪৫ পর্যন্ত সময় সুলতান শের শাহ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে এ সেতুটি নির্মান করেন। পরবর্তীতে এ ব্রীজের পাশে এক মহিলা পিঠা বিক্রি করত বলে পিঠাওলির পুল হিসেবে পরিচিতি পায়। এ ঐতিহাসিক সেতু রক্ষার দাবীতে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক রাখী রায় বলেন, শের শাহ্ সেতুটি মহামূল্যবান প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ। ঐতিহাসিক এ সেতুটি রক্ষনাবেক্ষনের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে অনেক আগেই লিখিত আবেদন করেছি। তবে সেতুটির অনেকাংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি আগামীকাল (আজ) সরেজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট সরেজমিন প্রতিবেদন দাখিল করব।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটি সড়ক ও জনপদের আওতাধীন বিধায় কে বা কারা রাস্তা খনন করছে এ বিষয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ নষ্ট করছে এ বিষয়টি আমাকে অধিদপ্তরের কেউ জানায়নি। আমি সরেজমিন দেখে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবগত করব।
আপনার মতামত জানান