১৩ মাসেও মেলেনি পেনশন! ঘুষ না দেওয়ায়
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ টি এম সোহেল একই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এস এম মনোয়ার হোসেনের কাছে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান কলেজ অধ্যক্ষের দাবীকৃত ঘুষের টাকা না দেওয়ায় অবসর গ্রহণের প্রায় ১৩ মাস পরেও অবসরকালীন ভাতা (পেনশন) পাচ্ছেন না বলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন।
রবিবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক কলম সৈনিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন প্রফেসর এস এম মনোয়ার হোসেন। এ সময় ওই কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফাও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রফেসর মনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এরপর ১ জুলাই বর্তমান অধ্যক্ষ বরাবর পেনশনসংক্রান্ত ফাইল জমা দিতে গেলে তিনি তা নেননি। এভাবে কয়েক দফায় ফাইল জমা দিতে গেলেও অধ্যক্ষ সোহেল সেটা গ্রহণ করেননি। পরে বাধ্য হয়ে তিনি ডাকযোগে পেনশনসংক্রান্ত ফাইল বর্তমান অধ্যক্ষ বরাবর পাঠালেও তিনি আমলে নেননি। পরবর্তী সময়ে ওই ফাইলটি অগ্রায়ণের জন্য তিনি দফায় দফায় অধ্যক্ষ বরাবর চিঠি দিলে কলেজ অধ্যক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাইলটি ‘অসম্পূর্ণ আছে’ উল্লেখ করে তাকে পাল্টা চিঠি দেন। এভাবে পাল্টা-পাল্টি চিঠি আদান-প্রদানের পর অবশেষে ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পেনশনের ফাইলটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় মাউশিতে পাঠান অধ্যক্ষ সোহেল। এ কারণে তার পেনশন অনুমোদনপ্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
প্রফেসর মনোয়ার হোসেন আরো অভিযোগ করে বলেন, প্রকৃতপক্ষে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় অধ্যক্ষ এমনটা করছেন। নিজের আস্থাভাজন শিক্ষককে দিয়ে সাবেক উপাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফার কাছে ঘুষের প্রস্তাব দেন অধ্যক্ষ সোহেল।
সাবেক উপাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা এ বিষয়ে বলেন, অভ্যন্তরীণ অডিট চলাকালীন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক সুলতান মাহমুদ আমার কাছে এসে প্রফেসর মনোয়ার স্যারের পেনশন ও অডিট নিষ্পত্তি করতে ৩০/৩২ লাখ টাকা অধ্যক্ষের টেবিলে রাখতে বলেন।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর টি এস সোহেল এ বিষয়ে বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি যথাযথ নিয়মে প্রফেসর মনোয়ার হোসেনের পেনশনসংক্রান্ত ফাইল মাউশিতে পাঠিয়েছি। বাকি কাজ তাদের। এখানে আমার কিছুই করার নেই। তিনি আরো জানান, আমার অগোচরে ইতিপূর্বে কে বা কারা অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য মন্ত্রণালয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ প্যাড ও আমার স্বাক্ষর জাল করে পত্র প্রেরণ করেছিল, যা ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ সদর থানায় ৯৬৩ নম্বর জিডিতে বিস্তারিত উল্লেখ করা আছে।
আপনার মতামত জানান