৬ ডিসেম্বর যেসব এলাকা হানাদারমুক্ত হয়
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ফেনী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, যশোর, ঝিনাইদহ, সুনামগঞ্জ জেলা এবং মৌলভীবাজারের তিন উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। চূড়ান্ত বিজয়ের ১০ দিন আগেই যৌথ বাহিনীর দুর্দমনীয় বীরত্বে মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করেন এসব জেলার বাসিন্দারা। জেলায় জেলায় নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
ফেনী: আজ ফেনী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের কবল থেকে ফেনীকে মুক্ত করে, বিজয়ের পতাকা ওড়ান দেশের বীর সন্তানেরা। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ফেনী জেলার (তৎকালীন ফেনী মহকুমার) স্বাধীনতাকামী জনগণের রয়েছে অভাবনীয় বীরত্বগাঁথা। পাশের দেশ ভারতের সঙ্গে তিন দিক থেকে ফেনীর সীমান্ত রয়েছে। ফেনী সীমান্তে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এরমধ্যে শুভপুর ও বিলোনিয়া যুদ্ধ অন্যতম। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা ফেনী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মরহুম খাজা আহমদের নেতৃত্বে ফেনীর মুক্তিযোদ্ধারা দেরাদুন ও চোত্তাখোলায় প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডার জাফর ইমামের নেতৃত্বে বিলোনিয়া যুদ্ধ একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেয়।
বিএলএফের ফেনী মহকুমা কমান্ডার হিসাবে জয়নাল আবেদীন ভিপি ও জহির উদ্দিন বাবর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ফেনীর পশ্চিমাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখেন। ৬ ডিসেম্বর ফেনী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে ফেনীকে মুক্ত করেন। দিবসটি উদযাপনে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
কুড়িগ্রামকুড়িগ্রাম: ডিসেম্বরের ৬ তারিখ কুড়িগ্রাম হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের পরাজিত করে কুড়িগ্রামকে মুক্ত করে। স্বাধীনতাযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হলেও এ অঞ্চলে সেদিন উদিত হয় স্বাধীনতার সূর্য, বাতাসে পত পত করে উড়তে থাকে স্বাধীন বাংলার পতাকা। এই দিনে মুক্তিবাহিনীর কে ওয়ান, এফএফ কোম্পানি কমান্ডার বীর প্রতীক আব্দুল হাই সরকারের নেতৃত্বে ৩৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল বিকাল ৪টায় কুড়িগ্রাম শহরে প্রথম প্রবেশ করে। এরপর তারা নতুন শহরের ওভারহেড পানির ট্যাংকের ওপরে (বর্তমান সদর থানার উত্তরে অবস্থিত) স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে চারিদিকে ছড়িয়ে দেন বিজয়বার্তা। সেদিন বিজয় মিছিলে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাগত জানাতে হাজারো মুক্তিকামী মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। ২৩০ দিন পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে মুক্ত হয় উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রাম।
প্রায় অর্ধশতাধিক অপারেশনে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কুড়িগ্রামে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনে নেতৃত্বদানকারী কে ওয়ান, এফএফ কোম্পানি কমান্ডার বীর প্রতীক আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে গণতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ চর্চার মাধ্যমে গোটা জাতি প্রজন্মান্তরে মুক্তিযুদ্ধের সুফল ভোগ করুক। বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলে সবার জন্য সম অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে, এটাই আমার চাওয়া।’ দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কুড়িগ্রাম জেলা ইউনিট কমান্ড এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। রবিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে জেলা শহরের বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
লালমনিরহাটলালমনিরহাটলালমনিরহাট: উত্তরের জনপদ লালমনিরহাট আজ হানাদার মুক্ত হয়। এই দিনে হানাদার বাহিনী লালমনিরহাট থেকে পালিয়ে যায়। ১৯৭১ সালের পর থেকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে। প্রতিবছরের মতো এবারও দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, জেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সামাজিক–সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে তা সীমিত আকারে পালিত হবে। কর্ম সূচির মধ্যে রয়েছে মিলাদ মাহফিল, আলোচনাসভা ও বিজয় র্যালি।
তবে স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও লালমনিরহাট জেলার সব গণকবর চিহ্নিত ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারগুলোর মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের বুলেটে নিহত পিতার গণকবর চিহ্নিত করেছেন লালমনিরহাটের জেলাল শফি নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ঢাকায় অবস্থান করেন। মুক্তিযুদ্ধে এ জেলার ইতিহাসে তার পিতার নামও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার পিতাসহ অন্যদের যেখানে কবর দেওয়া হয়েছে। তা সরকারিভাবে চিহ্নিত বা সংরক্ষণের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলাল শফি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার বয়স কম হয়নি। বিগত সরকারগুলো মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারগুলোর কোনও খোঁজ রাখেনি। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগ সরকার এখন ক্ষমতায়। আমরা প্রত্যাশা করি এ সরকার এসব গণকবর চিহ্নিত করে, সংরক্ষণের দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।’
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলায় কতটি গণকবর রয়েছে এবং কতজন শহীদ হয়েছিলেন তার কোনও সঠিক তথ্য নেই। তবে এখন পর্যন্ত বড়খাতায় একটি, বাউরায় একটি, লালমনিরহাটে তিনটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে বড়খাতা এবং লালমনিরহাট রেলওয়ে গণকবর ছাড়া এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনও গণকবর চিহ্নিত করা হয়নি। বাউরায় জমগ্রাম জামে মসজিদ সংলগ্ন যে গণকবর চিহ্নিত করা হয়েছে। তাতে একজন বীর প্রতীকও রয়েছেন। তিনি তৎকালীন ইপিআর বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে জানা যায়।
দিবস পালনের প্রস্তুতি বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ব্যাপক আকারে কোনও কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়নি। দিবসটিকে ঘিরে সীমিত পরিসরে মিলাদ মাহফিল, শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।’ স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে দিবসটি উপলক্ষে লালমনিরহাটের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তোরণ নির্মাণ করেছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যশোর: আজকের দিনে যশোর হানাদার মুক্ত হয়েছিল। যশোরের চৌগাছা উপজেলার সলুয়া বাজারে হানাদার বাহিনী তৈরি করেছিল অগ্রবর্তী ঘাঁটি। সে সময় যশোর সেনানিবাসের তিন দিকেই মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী শক্ত ঘাঁটি গেড়ে বসে। প্রতিরোধ যুদ্ধের শেষ অভিযান চলে ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর। এ তিন দিন যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। মিত্রবাহিনীও সীমান্ত এলাকা থেকে যশোর সেনানিবাসসহ পাকিস্তানি আর্মিদের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পর্যুদস্ত পাকিস্তানি বাহিনী ৫ ডিসেম্বর থেকে পালাতে শুরু করে। এ দিন সকাল ও দুপুরে পাকিস্তানের নবম ডিভিশনের সঙ্গে ভারতীয় নবম পদাতিক ও চতুর্থ মাউন্টেন ডিভিশনের প্রচণ্ড লড়াই হয়। বিকালেই পাকিস্তানি সেনা অফিসাররা বুঝতে পারেন—যশোর দুর্গ আর কোনোভাবেই রক্ষা করা সম্ভব নয়। বেনাপোল অঞ্চলে দায়িত্বরত লে. কর্নেল শামসকে নওয়াপাড়ার দিকে দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন ব্রিগেডিয়ার হায়াত। আর নিজের ব্রিগেড নিয়ে রাতের আঁধারে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে তিনি পালিয়ে যান খুলনার দিকে। পালানোর সময় ৫ ও ৬ ডিসেম্বর শহরতলীর রাজারহাটসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই হয়। ৬ ডিসেম্বর বিকালে মিত্রবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল বারাতের নেতৃত্বে মিত্র ও মুক্তিবাহিনী সেনানিবাস দখল করে। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে যশোর জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ঝিনাইদহ: ডিসেম্বরে আজকের দিনে ঝিনাইদহ শত্রুমুক্ত হয়। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর আক্রমণে এদিন হানাদার বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আকাশে ওড়ে লাল সবুজের পতাকা। মুক্তির মিছিল ছড়িয়ে পড়ে জেলা থেকে গ্রাম-গ্রামান্তরে। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
সুনামগঞ্জ: ১৯৭১ সালের আজকের দিনে সুনামগঞ্জ শহর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। দিনটি উদযাপনের জন্য জেলা ও সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর শহরে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করেন মুক্তিযোদ্ধারা। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভোর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন দিক থেকে শহরে প্রবেশ করেন। হানাদার সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের বিষয়টি বুঝতে পেরে রাতেই সুনামগঞ্জ শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করার পর স্থানীয় ছাত্র-জনতা মুক্তির আনন্দে শহরের রাস্তায় নেমে আসেন। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিকামী জনতার ‘জয়বাংলা’ শ্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো শহর।
মৌলভীবাজারমৌলভীবাজারমৌলভীবাজার: ১৯৭১ সালের আজকের দিনে মৌলভীবাজার জেলার ৩টি উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়েছিল। উপজেলাগুলো হলো চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল ও হাওর বেষ্টিত এলাকা বড়লেখা এবং রাজনগর উপজেলা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও বিজয়নগর আজকের দিনে হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। জানা যায়, এস ফোর্সের অধিনায়ক লে.কর্নেল সফিউল্লাহর তত্ত্বাবধানে ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর আখাউড়ার উত্তরে সীমান্তবর্তী আজমপুর, রাজাপুর, সিঙ্গারবিল, মিরাশানি এলাকায় পাকিস্থানি বাহিনীর সঙ্গে ক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়। টানা তিন দিন চলে এই যুদ্ধ। যুদ্ধে অন্তত পাকিস্তানি বাহিনীর ৩৫ জন সেনা নিহত হয়। বন্দি করা হয় পাঁচ জনকে। মুক্তিবাহিনীর নায়েক সুবেদার আশরাফ আলী খান এ সময় শহীদ হন। আহত হন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে হানাদার সদস্য ও তাদের দোসররা দাঁড়াতে পারেনি। তারা তখন পিছু হটতে শুরু করে। পরে ৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী আজমপুরে অবস্থান নিলে সেখানেও যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ১১ জন সেনা নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর দুই সিপাহী ও এক নায়েক সুবেদার শহীদ হন। ৪ এবং ৫ ডিসেম্বর অবিরাম যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর প্রায় ১৭০ জন সেনা নিহত হয়। তখন গোটা আখাউড়া এলাকা মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াব্রাহ্মণবাড়িয়া৬ ডিসেম্বর আখাউড়া পুরোপুরি হানাদার মুক্ত হয়। আখাউড়ার খরমপুর, দেবগ্রাম, তারাগন, নয়াদিল, দরুইন, টানমান্দাইল, গঙ্গাসাগর, কর্নেল বাজার, মনিয়ন্দসহ বিভিন্ন স্থানে পাকিস্থানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল আখাউড়া দরুইনের মাটিতেই শহীদ হন। আখাউড়া মুক্ত হওয়ার পর আখাউড়ার প্রধান ডাকঘরের সামনে সর্ব প্রথম বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী। মুক্ত দিবস উদযাপনের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে স্মৃধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন ও আখাউড়া পোস্ট অফিসের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, বোচাগঞ্জ, বিরামপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলা আজকের দিনে শত্রু মুক্ত হয়। দিবসটি উপলক্ষে এসব জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আপনার মতামত জানান