সোনারগাঁয়ে আ’লীগের আহবায়ক কমিটিকে শোকজ
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ইস্যুতে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি কেন কোন প্রতিবাদ করেনি সে কারন দর্শানোর চিঠি দিতে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম এমপি।গতকাল তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের উপস্থিতিতে তিনি মুঠো ফোনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইকে ক্ষোভ প্রকাশ করে এই নির্দেশনা দিয়েয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।পাশাপাশি জেলা পরিষদকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহনেরও নির্দেশনা দিয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, সোনারগাঁয়ের জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার নির্দেশে গত ১৭ নভেম্বর সোনারগাঁ জি আর ইনস্টিটউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান ফটকের দেয়ালে স্থাপিত আনোয়ার হোসেনের নামফলক ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষনিকভাবে সোনারগাঁয়ের সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার ১৯ তারিখে প্রতিবাদ সমাবেশ আহবান করেন।
১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে সোনারগাঁ পৌরসভা সংলগ্ন সোনারগাঁ জি আর ইনস্টিটিউশনের সামনে নামফলক ভাঙ্গার প্রতিবাদে কায়সার হাসনাতের নেতৃত্বে , পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তৈয়ব আলী মেম্বারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন, মোগরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সাবেক সভাপতি ও পৌর মেয়রপ্রার্থী গাজী মুজিবুর রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, সাংগঠনিক সভাপতি কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফা কামাল নিলু, সহ সভাপতি মাহীন আলম, শ্রমিক লীগের আহবায়ক মাহবুব আলম, যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ শামীম, সদস্য সচিব গাজী আলমগীর, পৌর যুলীগের সাধারন সম্পাদক ফয়জুল হাসান বাবু, রেজওয়ানুল হক টিটু, ফয়জুল্লাহ রিপন, গাজী জুয়েল, মাইনউদ্দিন মেম্বার, শেখ রাসেলের উপজেলা আহবায়ক রাসেল আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক গাজী ওমর ফারুক, গাজী জুয়েল প্রমূখ।
এছাড়া জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সোনারগাঁয়েও বিক্ষোভ করা হয়েছিল। এই ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরে বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
তবে, একদমই চুপ ছিল সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি। এই ঘটনায় তারা কোন প্রতিবাদ, নিন্দা জানায়নি। কোন রকম কর্মসূচিও তারা দেয়নি। আর এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিকের কাছে তুলে ধরেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। গতকাল আনোয়ার হোসেন সকালের দিকে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দলীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং পুরো ঘটনাটি তিনি এই নেতার কাছে তুলে ধরেন। এই সময় মির্জা আজম আনোয়ার হোসেনের উপস্থিতিতেই নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইকে ফোন করেন এবং সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি এই ঘটনায় কেন কোন কর্মসূচি গ্রহণ করেনি জানতে চান।
পরে কেন্দ্রীয় এই নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটিকে শোকজ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে বিশ্বস্ত ওই সূত্রটি জানিয়েছে। এদিকে একই ইস্যু নিয়ে ওই দুপুরের দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদিরের সাথেও সাক্ষাৎ করেছেন আনোয়ার হোসেন। পুরো ঘটনা বিস্তারিত তিনি দলটির এই সাধারণ সম্পাদকের কাছে খুলে বলেন। দলীয় সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী সভাপতি আনােয়ার হােসেন এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে তিনি বলেন, “দলীয়ভাবে যাইনি, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেক্রেটারি ও সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে গিয়েছি। বিষয়টি তারা প্রধানমন্ত্রীকেও জানাবেন। এছাড়া আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমার সামনেই জেলার প্রেসিডেন্টকে ফোন করেছিলেন এবং সোনারগাঁ আওয়ামী লীগকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
“এদিকে এ প্রসঙ্গে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই’র মুঠোফোনে এবাধিকবার কল করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে তার পক্ষ থেকে কোন রকম বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাড. সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন’ “আমাদেরকে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। আর আমরা ফলক ভাঙার ব্যাপারে প্রতিবাদ করেছি। বলেছি এটা নিন্দনীয়। এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে মামলা করতে বলেছি। কিন্তু তারা মামলা করেনি। আর এটাতো এমপি খোকা ভাঙে নাই। কে বা কারা ভাঙছে সেটিও আমরা জানি না । তাহলে আমরা কী বলব, কাকে বলব।”
সুত্র: যুগেরচিন্তা
আপনার মতামত জানান