কায়সার-মোশারফ-কালামের অস্তিত্বের লড়াই
সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের বটবৃক্ষ হিসেবে পরিচিত হাসনাত পরিবারের কর্ণধার আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সোনারাগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন এবং সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের তৃণমুল নেতা মাহফুজুর রহমান কালামের অস্তিত্বের লড়াই হিসেবে দেখছেন আসন্ন পৌরসভার নির্বাচনকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন সোনারগাঁ পৌরসভায় নৌকার জন্য এমন একজন প্রার্থী বেছে নিতে হবে যিনি তাদের নেতৃত্বে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগের সুখে দুখে যিনি তাদের পাশে অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকায় অত্যন্ত বিচক্ষনতার সাথে প্রার্থী বাছাই তাদের রাজনৈতিক ভবিষৎ নির্ধারন করবে। তৃণমুল সাধারন মানুষের কাছে যে প্রার্থীর গ্রহণ যোগ্যতা আছে তাঁকে মননয়ন দিলেই নৌকার বৈতরনী পার করতে পারবেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে শুধু দল নয় ব্যক্তি ইমেজ জয় পরাজয়ে মূখ্য ভুমিকা পালন করবে। অন্যথায় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ফাঁকে বিএনপির প্রার্থীর জয়ের সম্বাবনা আছে বলেও জানান স্থানীয় ভোটাররা।
সোনারগাঁ পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনকে হাসনাত পরিবার ও সোনারগাঁয়ের মূলধারার আওয়ামী লীগের ‘অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই’ হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকলেও সোনারগাঁয়ের সংসদ সদস্য হিসেবে দ্বিতীয় বারের মতো শপথ নিয়েছেন জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। খোকা রাজনৈতিক কুটচাল, দলীয় কোন্দল ও রাজনৈতিক বিদ্ধেষের কারনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ একে বারেই কোন ঠাসা অবস্থায়। এমপি’র পর এবার সোনারগাঁ পৌর মেয়রের চেয়ার নিজেদের মধ্যে রাখতে জোড়ালোভাবে মাঠে নেমেছেন এমপি। মেয়র পদে নির্বাচিত হলে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কফিনে শেষ পেরেক বসিয়ে দিবে।
জাতীয় পার্টি তাদের পরিকল্পিত পথে হাটলেও আওয়ামী লীগের অবস্থান বিপরীত মুখী। আওয়ামী লীগের সেই ইদুর বিড়াল খেলা চলছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে। এখানে নৌকার মনোনয়ন পেতে মরিয়া চার জন। এদের মধ্যে দু’জন ঢাকার রাজনীতি করেন। নির্বাচন উপলক্ষে মননয়নের দৌড় ঝাঁপে জোড়ালোভাবে মাঠে নেমেছেন। তারা নির্বাচনী মাঠে নামার আগে স্থানীয় মূল ধারার আওয়ামী লীগের সাথে কোন মতবিনিময় সভা না করেই নিজেদের প্রার্থী নিজেরাই ঘোষনা করেছেন বলে জানা যায়। তাদের নির্বাচনী পোষ্টারে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কোন নেতার ছবি না থাকলেও অন্য উপজেলার এমপিদের ছবি দিয়ে দেয়ালে দেয়ালে পোষ্টার সাটিয়ে রেখেছেন। এদের মধ্যে একজন নৌকার মননয়ন পেতে কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন। গত পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের পরাজিত প্রার্থী এবার তার প্রভাবশালী আত্মীয়ের মাধ্যমে নৌকার মননয়নের জন্য মাঠে কাজ করছেন। অন্যদিকে তিনি নিজে নৌকা প্রত্যাশী হলেও তার ছোট ভাই নাগরিক কমিটির ব্যানারে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে নিয়মিত উঠান বৈঠক, আলোচনা ও মত বিনিময় করছেন।
আরেক জন নৌকার মননয়নের জন্য স্থানীয় এক শিল্পপতির দারত্ব হয়েছেন। আগামী ৬ তারিখ শুক্রবার তার সমর্থনে সোনারগাঁ পৌরসভায় শিল্পপতি মামুন সাহেবের বাড়িতে আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন। এ নিয়ে একটি ভিডিও বার্তা সোস্যাল মিডিয়ায় নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান বরাবরের মতো স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মাঠে কাজ করছেন। এবারও সাধারন মানুষের প্রশ্ন সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ কি তার সঠিক মূল্যায়ন করবে নাকি অতিতের ঘটনার পূনরাবৃত্তি করবে। গাজী মুজিবুর রহমান দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে হাসনাত পরিবারের সাথে রাজনীতি করছেন। কোন রকম লোভই তাকে এ পরিবারের বাইরে নিতে না পারলেও বার বার বঞ্চিত হয়েছেন কারা নিযাতিত এ নেতা। নিজ দলের নেতাদের প্রকাশ্য বিরোধীতার জন্য ২০১১ সালে মাত্র ৫৫০ ভোটের ব্যবধানে বিএনপি জামাত সমর্থিত প্রার্থীর নিকট পরাজিত হয়েছেন।
আপনার মতামত জানান