কোন পথে সোনারগাঁ পৌর নির্বাচন !
সোনারগাঁ পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতা বদলের মহোৎসব চলছে। কার সাথে থাকলে নৌকার মনোনয়ন আসবে এ চিন্তায় অনেকেই নেতা বদলাচ্ছেন। স্থীর অবস্থায় আছেন তৃণমুলের জনপ্রিয় ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত গাজী মুজিবুর রহমান। মনোনয়নের প্রত্যাশায় আওয়ামী লীগের দুইজন এবং নাগরিক কমিটির একজন ইতিমধ্যে আহবায়ক কমিটিতে যোগ দিয়েছেন। আহবায়ক কমিটির সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন অপর একজন নারী নেত্রী। চারজন মনোনয়ন প্রত্যাশী আহবায়ক কমিটির সাথে যোগ দিলেও গাজী মুজিবুর রহমান তার অবস্থানে অনঢ়। তিনি সোনারগাঁয়ের আওয়ামী পরিবারখ্যাত সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেনের সাথেই আছেন। পৌরসভার বাজারে বাজারে চায়ের দোকানের আড্ডায় সাধারন মানুষের একটাই কৌতুহল কাদের হাত ধরে নৌকা আসছে পৌর নির্বাচনে। কায়সার, মোশারফ নাকি আহবায়ক কমিটির।
সোনারগাঁয়ের প্রয়াত নেতা, আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ ও কর্মীবান্ধব রাজনীতিবিদ আবুল হাসনাত সাহেবের হাত ধরে সাবেক যুবলীগের সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান রাজনীতি শুরু করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছরের রাজনীতিতে আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রনী ভুমিকা রাখা মুজিবুর রহমান জেল, জুলুম ও নির্যা তনের শিকার হলেও এ পরিবারের সাথেই আছেন।
অন্যদিকে বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমান একবার মহাজোট প্রার্থীর বিরুদ্ধে এবং একবার নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে নাগরিক কমিটির ব্যানারে নির্বাচন করে জয় লাভ করেন। দুটি নির্বাচনেই তার জয়ের পিছনে অগ্রনী ভুমিকা রেখেছে বিএনপির সমর্থন। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সাথে সাদেকুর রহমানের কিছু স্থির চিত্র জনমনে প্রশ্ন তোলে তিনি আসলে কোন দলের।
বিএনপি, জাতীয় পার্টি নাকি আওয়ামী লীগের। ইদানিং তিনি আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটিতে যোগদান করেছেন বলে জানা যায়। তার হাত ধরে সোনারগাঁ পৌরসভায় আহবায়ক কমিটি স্থান করে নিচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন আহবায়ক কমিটি মেয়র সাদেকুর রহমানের জন্য নৌকার মনোনয়নের প্রস্তাব রাখবেন কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।
অন্যদিকে ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি ও ছাত্রলীগ নেতা ছগীর আহমেদ নির্বাচনী মাঠে একা নামলেও পরে তিনিও আহবায়ক কমিটির সভাসমাবেশে যোগদান করে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করেন।
২০১৪ সালে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগে যোগদান করে ২০১৫ সালের নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন ছিনিয়ে এনে বিপুল ভোটে পরাজিত হন এবং আসন্ন নির্বাচনে আবারো নৌকার মনোয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত যুবলীগের কার্যালয় উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় আকস্মিকভাবে যোগ দেন। সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত ফজলে রাব্বীকে নৌকা প্রতিক এনে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেননি তিনি সাধারন কর্মীর মতো পৌরসভার দুয়ারে দুয়ারে নৌকার জন্য ভোট চেয়েছেন। সাথে ছিলেন মনোনয়ন বঞ্চিত ত্যাগী নেতা গাজী মুজিবুর রহমান। সঙ্গত কারনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হাতে নৌকার বিজয় এনে দিতে পারেননি। নির্বাচনের পরপরই ফজলে রাব্বী যোগ দেন আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের সাথে। দীর্ঘদিন কালামের সাথে থেকে হঠাৎ করে আবারো কালামকে হাত মিলয়েছেন আহবায়ক কমিটির সাথে।
অন্যদিকে বদরুন্নেসা কলেজ ছাএলীগের সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরিন সুলতানা ঝরাকে মীর্জা আজমের জন্মদিনে আহবায়ক কমিটির সাথে ফুল দিতে দেখা গেছে।
শুধু আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মাঠে থাকলেও অন্যদলগুলো আছেন নিবির পযবেক্ষনে। আওয়ামী লীগের দলীর কোন্দলে যখন তারা নিজেরা নিজেরা দ্বন্ধসংঘাত ও স্নায়ুযুদ্ধে দুর্বল হয়ে পড়বেন একজন মনোনয়ন পেলে অন্যেরা যখন পূর্বের মতো নৌকা ডোবাতে পূর্নপ্রস্তুতি নেবেন ঠিক তখনই বিএনপি অথবা জাতীয় পার্টি তাদের প্রার্থী ঘোষনা করবেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত একটি পক্ষ চাচ্ছে মেয়র সাদেকুর রহমানকে নৌকার মনোয়ন এনে দিতে। যদি তা না পারেন তবে আওয়ামী লীগের দুর্বল প্রাথীদের দিয়ে নৌকার মনোনয়ন এনে স্বতন্ত্র প্রাথী এবং অন্যদল থেকে প্রার্থী দিয়ে নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করতে। নিজেদের মধ্যে মতের অমিল হলেও একটা সিদ্ধান্তে তার অনঢ় কোনভাবেই যেন গাজী মুজিবুর রহমান নৌকার মনোনয়ন না পান তার জন্য তারা সব চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। পারিবারিক ঐতিহ্য, ত্যাগ, আদর্শ ও অসহায় মানুষের অতিপ্রিয় গাজী মুজিবুর রহমান নৌকার মনোয়ন পেলে কুচক্রিমহলের সর্বাত্মক চেষ্টায় তার বিজয় ঠেকানো একেবারেই অসম্ভব।তার বর্তমানে সবদল ও প্রার্থীদের একমাত্র প্রতিদ্বন্ধী গাজী মুজিবুর রহমান। যার জন্য রয়েছে পৌরসভা তথা সোনারগাঁয়ের সকল মানুষের অগাধ ভালবাসা।
আপনার মতামত জানান