ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশে স্বর্ণ ব্যবসায়ী দুই ভাইকে প্রকাশ্যে অপহরণ ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার লুটের ঘটনায় মুন্সিগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে এক পুলিশ সদস্য ও একজন সাংবাদিকসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় লুণ্ঠিত প্রায় ৯৫ ভরি স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে।পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি বাসে থাকা স্বর্ণ ব্যবসায়ী দুই ভাইকে পুলিশি পোশাক পরিহিত ডাকাতরা প্রকাশ্য দিবালোকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে বাস থেকে নামিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়।
এরপর ডাকাতরা ওই দুই ব্যবসায়ীকে মারধর করে তাদের কাছে থাকা মোট ১৪৫ ভরি ৮ আনা ৪ রতি স্বর্ণালঙ্কার, দুটি মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, দুটি এটিএম কার্ড এবং একটি এনআইডি কার্ড লুট করে নেয়। লুটের পর ডাকাতরা দুই ভাইকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ এলাকায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। ভুক্তভোগীরা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে অভিযানে নামে মুন্সীগঞ্জের ডিবি পুলিশ।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) থেকে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে একে একে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
মাইক্রোবাসের চালক জাকির হোসেনকে ঢাকার কাফরুল থেকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে ১০ ভরি ৪ আনা স্বর্ণ ও সাত লাখ টাকা উদ্ধার হয়।সাব-ইন্সপেক্টর আকতারুজ্জামান মুন্সী একই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ঢাকার পুলিশের বিশেষ শাখার সাব-ইন্সপেক্টর। তার হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় ৪৩ ভরি ১ আনা স্বর্ণ, হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি এবং তিন সেট পুলিশের ইউনিফর্ম।
রমজানকে (সাংবাদিক) মিরপুর, শাহ আলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন। তিনি ঢাকার শাহ আলী থানা এলাকার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিনিধি। তার কাছ থেকে ২০ ভরি ৮ আনা স্বর্ণ, স্বর্ণ মাপার স্কেল, আইডি কার্ড ও পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার হয়।
রমজান আলীকে (কৃষক লীগ নেতা) মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মানিকগঞ্জের কৃষক লীগের নেতা। তার কাছ থেকে পাওয়া যায় ১৩ ভরি ৭ আনা স্বর্ণ ও এক লাখ ৫০ হাজার টাকা।
পুলিশ সুপার জানান, ডাকাতদের একজন লুটের স্বর্ণের একটি অংশ মিরপুরের ইসলাম জুয়েলার্সে বিক্রি করেছিল। তাই দোকানের মালিক ইসমাইল হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে সর্বমোট প্রায় ৯৫ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ অর্থসহ অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনায় জড়িত পলাতক আরও একজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং অবশিষ্ট লুট হওয়া স্বর্ণ উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
আপনার মতামত জানান