৭১’এ সোনারগাঁয়ে রাজাকার ছিল যারা
৭১’এ যারা রাজাকার ছিল স্বাধীনতার পর তাদের নামের পরে রাজাকার নয় সাব (সাহেব), ভূঁইয়া, দফাদার ও তালুকদার উপাধি যোগ হয়েছে। তারা সমাজের বিচারপতির আসন দখল করে নিয়েছে।কারন ৭১’এ লুটপাট করে প্রচুর ধন, সম্পত্তি ও টাকার মালিক হয়ে যান। তাদের টাকা ও ক্ষমতার কাছে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারন মানুষ অসহায় ও জিম্মি হয়ে পরেছে। বর্তমানে তাদের বংশধররা সমাজে ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ কোষের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম খন্ডে এবং রীতা ভৌমিক তার মুক্তিযুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ বইতে ১৯৭১ এ নারায়ণগঞ্জে যারা পাকিস্তানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করেছে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাদের নামের তালিকা :
সোলমান রাজাকার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানা বৈদ্যেরবাজার গ্রামের (ইউনিয়ন বৈদ্যেরবাজার) সাবেক বৈদ্যের বাজার থানা বর্তমানে সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের জোনাব আলীর ছেলে এ এস এম সোলায়মান ছিলেন রাজাকারদের প্রধান সমন্বয়ক।মুক্তিযুদ্ধের সময় সে ছিল শান্তি কমিটির সভাপতি । একাত্তরের মালেক মন্ত্রীসভার শ্রম, সমাজ কল্যাণ ও পরিবার পরিকল্পনা দফতরের মন্ত্রী ও জেলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। সবাই তাকে সোলমান রাজাকার হিসিবে চিনে।
মন্নাফ রাজাকার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের আব্দুল মন্নাফ ভূইয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
মান্নান রাজাকার
উপজেলার জামতলি ইউনিয়নের মুসারচর গ্রামের চান্দে আলী ভূঁইয়ার আব্দুল মান্নান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার দলের সক্রিয় সদস্য ছিল।
রউপ্পা রাজাকার
উপজেলার বারদী ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রহিম বখশ মিলকীর ছেলে আব্দুর রব মিলকী মুক্তিযুদ্ধের সময় বারদী ইউনিয়ন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
কাশু রাজাকার
সোনারগাঁ পৌরসভার গোয়ালদী গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম মুক্তিযুদ্ধের সময় আমিনপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
কুদুস রাজাকার
জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিল।
রাজাকার আনোয়ারা
কাঁচপুর ইউনিয়নের কাঁচপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারা মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ছিলেন।
আলাউদ্দিন রাজাকার
সোনারগাঁ থানার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের বাসিন্দা আলাউদ্দিন ছিল শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান
জাহের রাজাকার
শম্ভুপুরা ইউনিয়নের শম্ভুপুরা গ্রামের এম এ জাহের ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
ওদু রাজাকার
জামপুর ইউনিয়নের হাতুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ওদুদ মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ছিল।
গাফ্ফা রাজাকার
৭১’এ শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল সনমান্দী ইউনিয়নের সনমান্দী গ্রামের গফুর সরকার ।
রাজাকার জমির কেরানি
সোনারগাঁ পৌরসভার ভবনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা জমির আলী কেরানি রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিল।
টেক্কা রাজাকার
সোনারগাঁ পৌরসভার হাতকুপা গ্রামের বাসিন্দা টেক্কা সামসু রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিল।
ধনু রাজাকার
জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্দিয়া গ্রামের মইজউদ্দিন শিকদারের ধনু ৭১’এ আলবদর বাহিনীর সদস্য ছিল।
রাজাকার বাখক্কা আলী
সাদিপুর ইউনিয়নের বাখর আলী শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
মাসটর জাকার
উপজেলার চরলাল গ্রামের বোরহান মাস্টার শান্তি কমিটির সদস্য ছিল।
মউজ্জা রাজাকার
বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের হামছাদি গ্রামের ময়েজ উদ্দীন চৌকিদার মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারের সক্রিয় সদস্য ছিল।
রফিক রাজাকার
সোনারগাঁ উপজেলার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
সাবু রাজাকার
সোনারগাঁয়ের আলমদী গ্রামের শাহাবুদ্দিন ভূঁইয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ছিল রাজাকার সদস্য ছিল। তাকে এলাকায় সাবু রাজাকার হিসেবে চিনে।
সিরাজ রাজাকার
জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া গ্রামের গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামকে এলাকার প৭চা রাজাকার বলে ডাকত সবাই। সে মুক্তিযুদ্ধের সময় চিহ্নিত রাজাকার ছিল।
হেলু রাজাকার
হেলু রাজাকার ওরফে হেলালউদ্দিনের বাড়ি সাদিপুর ইউনিয়নের ভারগাঁও গ্রামে।মুসলিম লীগের কর্মী হেলু মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তিকমিটির সদস্য ছিল।
হুসু রাজাকার
কাঁচপুর ইউনিয়নের হোসেন খাঁ ওরফে হুসু রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
মইক্কা রাজাকার
বৈদ্যেরবাজার গ্রামের (ইউনিয়ন বৈদ্যেরবাজার) জোনাব আলীর ছেলে মহিউদ্দিন মোল্লা ওরফে মইক্কা রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির সদস্য ছিল।
মৌলভী রাজাকার
সোনারগাঁ পৌরসভার আমিনপুরের রাজা মৌলভী ওরফে মৌলভী রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ও থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল।
নাসু রাজাকার
নোয়াগাও ইউনিয়নের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন নাসু রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
সামসু রাজাকার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বাসিন্দা সামসুল হক খান ওরফে সামসু রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল।
বাইক্কা রাজাকার
সাদিপুর ইউনিয়নের বরগা গ্রামের বাহর আলী ওরফে রাইক্কা রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির সদস্য ছিল। সে ছিল মুসলিম লীগের কর্মী।
গদা রাজাকার
সাদিপুর ইউনিয়নের নোয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা গদাধর ঘোষ গদা রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময় চিহ্নিত রাজাকার ছিল।
তথ্য সুত্র: ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ কোষের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম খন্ড এবং রীতা ভৌমিকের মুক্তিযুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ এবং অনলাইন মিডিয়া।
আপনার মতামত জানান