হেডফোনের আগুনে অপূর্ব মারা গেছে

প্রকাশিত



ফুটফুটে কিশোর অপূর্ব দাস আগুনে পুড়ে তিনদিন মৃত্যু যন্ত্রনা সহ্য করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানে। মোবাইল চার্জ দেওয়া অবস্থায় হেডফোন ব্যবহারের সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘরে আগুন লেগে কিশোর অপূর্ব মারাত্মকভাবে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিল। আজ ৯ জুন সকাল ৯ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিবির পরিচার্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অপূর্বের মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তারা।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সোনারগাঁ প্যেরসভার জয়রামপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ভাড়াটিয়া বানুরানী দাস ও তার ১৭ বছরের সন্তান অপূর্ব দাস ৭ জুন সকালে বিদ্যুতায়িত হয়ে শরীরে আগুন লেগে মারাত্মকভাবে আহত হয়। এ সময় অপূর্বদের রুম ভেতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। বাড়িওয়ালা ও আশপাশের মানুষের আর্তচিৎকারে দরজা খুলেই অপূর্ব মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তারা শরীরে হেডফোনের তার পেঁচানো ছিল। পরে তার মাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অপূর্ব মারা যায় এবং তার মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

অপূর্বের মৃত্যুতে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ জি, আর স্কুল এন্ড কলেজের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা শোক জানিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষানুরাগী সদস্য আলহাজ্ব মনিরুরুজ্জামান জানান, অপূর্ব অত্যন্ত বিনয়ী ও মেধাবী ছাত্র ছিল। জন্মের পর থেকেই সে মায়ের কাছে বড় হয়েছে। মা ই তার বাবা-মা। বাবার আদর তার ভাগ্যে জোটেনি।

অপূর্বের মৃত্যুতে শোক ও তার মায়ের সুস্থ্যতা কামনা করেছেন, সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান ও সোনারগাঁ থানা প্রেসক্লাবের সকল সদস্য। মোবাইল চার্জে দিয়ে কেউ হেড ফোন কানে লাগিয়ে ঘুমিয়ে না পড়ে এবং মোবাইল চার্জে দিয়ে কেউ যেন কোনভাবেই তা ব্যবহার না করে এ অনুরোধ জানিয়েছেন থানা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ।

বাড়ির মালিক মিজানুর রহমান বিলাপ করে বলেন, অপূর্ব আমার সন্তান চেয়েও বেশী ছিল। আমার ছেলেরা বিদেশ থাকে। কে আমাকে বলবে মামা তুমি সাবধানে থেক। মামা আমি কোনদিন তোমাদের ছেড়ে যাব না। আজ সব ছিন্ন করে আমাদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে অপূর্ব চলে গেল।

আপনার মতামত জানান