হারুন-বিপ্লবসহ অনুপস্থিত ১৫ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা

প্রকাশিত

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার জেরে আত্মগোপনে থাকা পুলিশের কর্মবিরতির পর দেশের সব থানায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে পুলিশের অনেক সদস্য এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি। অনেকে এখনো ট্রমায় ভুগছেন। অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) হারুন অর রশীদ এবং যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারসহ অন্তত ১৫ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পাশাপাশি সারা দেশে আরো অনেক পুলিশ সদস্য এখনো কাজে যোগ দেননি।

এ তথ্য জানিয়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র বলছে, এর মধ্যে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন।

ডিএমপি সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সদর দপ্তরের ক্রাইম বিভাগ ও প্রশাসন বিভাগসহ দু-একটি ইউনিটের সদস্যরা পুরোদমে অফিস করছেন। তবে আরো বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ থানা পুলিশের অনেক সদস্য এখনো ঠিকমতো কাজে যোগদান করেননি। তাদের মধ্যে অনেক সদস্য এরই মধ্যে মামলার আসামি হয়েছেন।
সহিংসতার ঘটনায় অনেকে মানসিক আঘাত বা ট্রমায় ভুগছেন।

ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেন, ডিএমপির প্রায় সব সদস্য এর মধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন। হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকারের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তাঁরা এখনো কাজে যোগ দেননি। তাঁদের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

থানার কাজে গতি আসেনি

পুলিশ সূত্র জানায়, থানাগুলোতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন। থানাগুলো চালু হলেও বেশির ভাগ থানায় মামলা দায়ের হয়নি। আগের মতো স্বাভাবিক কার্যক্রমে যেতে কিছুদিন সময় লাগবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কারণ এখনো অনেক থানায় বসার পরিবেশ হয়নি।

এদিকে থানা পুলিশের পাশাপাশি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বেড়েছে ট্রাফিক পুলিশ।
তবে কোনো কোনো সড়কে এখনো শিক্ষার্থী রয়েছেন।

সারা দেশে থানাগুলো থেকে এ পর্যন্ত কত অস্ত্র, গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জাম লুট হয়েছে, এখনো তালিকাভুক্ত করতে পারেনি পুলিশ। লুট করা অনেক অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। আগামী সোমবারের (১৯ আগস্ট) মধ্যে অস্ত্র জমা না দিলে উদ্ধার অভিযান শুরু হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ অবস্থায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বার্তায় জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে মোট ৬৩৯ থানার সব কটিতেই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে মহানগরের (মেট্রোপলিটন) অধীন ১১০টি এবং জেলা পর্যায়ের ৫২৯টি থানা কার্যক্রম শুরু করেছে। এ ছাড়া রেলওয়ে পুলিশের ২৪টি থানার সব কটিই পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করেছে।

মাঠ পর্যায়ে পুলিশের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি শুরু হয়নি। রাতে টহল জোরদার করা হয়নি। চেকপোস্টে তল্লাশি নেই। ফলে জনমনে আতঙ্ক কাটেনি। হত্যার পাশাপাশি ছিনতাই ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের ৫৩৪টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ হাজার ২১৯টি গুলি, ৩৫৯টি টিয়ার গ্যাস শেল ও ১৪২টি সাউন্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে।

থানার বর্তমান পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে সবুজবাগ থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম চলছে। টহলসহ সব কাজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিরপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করছেন। তবে আগের মতো স্বাভাবিক কার্যক্রমে যেতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।’

আপনার মতামত জানান