হাইওয়ে পুলিশের ষ্টিকারে মহাসড়কে চলে নিষিদ্ধ পরিবহন

প্রকাশিত


কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে মহাসড়কে নিষিদ্ধ পরিবহন সিএনজি চালকদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে মহাসড়কে চলাচলের অনুমতি ও হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন মহাসড়কে চলাচলরত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালকরা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর সেতু থেকে মেঘনা সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ সিএনজি চলাচলে বাধা না দিয়ে শুধুমাত্র ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে ওই সকল যানবাহনের প্রায় ২০০ চালক একত্র হয়ে উপজেলার পিরোজপুর এলাকায় মহাসড়কে বাঁশ ফেলে অবরোধ করে হাইওয়ে পুলিশের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় মহাসড়কের দুপাশে ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।


খবর পেয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ চালকরা পুলিশের সামনেই চাঁদাবাজি বন্ধ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে তারা কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় কর্মরত এসআই ও এএসআইদের শাস্তি দাবি করেন। তারা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা, গাউছিয়া, কুড়িল ব্রীজ, পাঁচরুখী ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ঘাট পর্যন্ত অবাধে সিএনজি চালাতে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের কাছ থেকে প্রতিমাসে ১৫০০ টাকার বিনিমেয় সুন্দরবন পরিবহন লিখা ষ্টিকার নিতে হয়। এছাড়াও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলরত লেগুনা জন্য রয়েছে মাসিক ৩০০০ টাকায় ষ্টিকার। যেসব সিএনজি ও লেগুনা ‘সুন্দরবন পরিবহন’ লিখা ষ্টিকার সাটানো থাকে সেসব পরিবহন মহাসড়কে অবাধে চলাচল করতে পারে।

সরেজমিন কয়েকটি সিএনজি তল্লাশি করে সুন্দরবন পরিবহন লেখা ষ্টিকার দেখতে পাওয়া যায়। ষ্টিকারের ছবি তুলতে গেলে সিএনজি চালকরা জানান, আমরা গরিব মানুষ, আমাদের পেটে লাথি দিবেন। পুলিশকে মাসে ১৫০০ টাকা দিয়েও আমরা পরিবার নিয়ে ভালমতো চলতে পারি।

কাঁচপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত প্রায় ৪০০টি অটোরিকশার চালকরা প্রতিদিনই ১০০-২০০ টাকা হারে চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে যাত্রী পরিবহন করে। নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার পরও তারা প্রতিদিনই নিয়ম করে ২০-৩০ টি অটোরিকশা সহ বিভিন্ন যানবাহন আটক করে ৪-৮ হাজার টাকা আদায় করে। অন্যথায় ডাম্পিং করে রাখেন। তাদের অভিযোগ ডাম্পিংয়ে রাখা অটোরিকশার ৪২ হাজার টাকার ব্যাটারি খুলে দশ থেকে পনেরো হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। এছাড়াও চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে চালকদের শারিরিক নির্যাতন করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।

বিক্ষোভ চলাকালে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট মোস্তাফিজুর রহমানের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে চালকরা বলেন, প্রতিদিন আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কেন আমাদের গাড়ি আটকে দেন। ষ্টিকার লাগানো সিএনজি কেন আটকান না’ বলেই চাঁদাবাজ পুলিশদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন চালকরা। এ সময় সার্জেন্ট মোস্তাফিজুর রহমান মহাসড়কে গাড়ি চালানোর মৌখিক অনুমতি দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভরত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালকরা।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মোহাম্মদ ইব্রাহিম ষ্টিকারের ব্যাপারে বলেন, কে বা কারা ষ্টিকার দিচ্ছে তা আমরা জানি না। তবে এ ধরনের অপকর্মে যদি কাঁচপুর হাইওয়ে থানার কেউ জড়িত থাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মতামত জানান