সড়ক বন্ধ করে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা
টাঙ্গাইলের বাসাইলে নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে সখীপুর-বাসাইল সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই সড়ক ব্যবহারকারীরা।
শুক্রবার (২২ জুলাই) সরেজমিনে বাসাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা গেছে, টাঙ্গাইল থেকে আসা সখীপুরগামী সব ধরনের যানবাহন আটকে দিচ্ছে পুলিশ সদস্যরা। পরে সেই যানবাহনগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। কর্তৃপক্ষ বলছে, বৃহৎ আয়োজনের কারণে সামান্য ভোগান্তি মেনে নিতে হবে।
জানা গেছে, বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মালেক মিঞা স্মৃতি নৌকা বাইচ বাসাইলের চাপড়া বিলে দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হয়। নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। এতে বাসাইল হতে সখীপুর সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
টাঙ্গাইল থেকে বাসাইল দিয়ে সখীপুর যাওয়া যানবাহনকে বাসাইল বাসস্ট্যান্ড থেকেই ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অপর দিকে সখীপুর হতে টাঙ্গাইলগামী যানবাহনগুলো পুনরায় সখীপুরের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই সড়ক ব্যবহারকারী যাত্রী ও চালকরা। এতে সখীপুর যেতে পরিবহনগুলোকে ৮০ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে যেতে হচ্ছে। যেখানে সখীপুর হতে বাসাইলের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।
এদিকে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. জোয়াহেরুল ইসলামকে। এ ছাড়া অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি। উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন। এ ছাড়া বরেণ্য অতিথি করা হয়েছে জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারকে।
শিভলী নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, টাঙ্গাইল থেকে মোটরসাইকেলযোগে জরুরি কাজে সুন্যাতে যাচ্ছি। বাসাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। একটি নৌকা বাইচের কারণে সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সড়ক বন্ধ থাকায় হাজার হাজার যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই কাজটি ঠিক হয়নি।
সুজন নামে এক মাইক্রো বাসচালক বগুড়া হতে নলুয়া যাত্রী নিয়ে আসছেন। বাসাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকাতেই আটকে দেওয়া হয়েছে তাকে। এখন ৮০ কিলোমিটার ঘুরে নলুয়া যেতে হবে। যেখানে বিশ কিলোমিটার সড়ক বাসাইল হতে সখীপুর পর্যন্ত।
বাসাইলের আওয়ামী লীগ নেতা সরকার মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ফারুক বলেন, হাজার হাজার মানুষের দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে এই নৌকা বাইচের কারণে। নৌকা বাইচটি অন্যত্র আয়োজন করলে মানুষের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।
বাসাইলে বাসস্ট্যান্ডে দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর মো. শফি বলেন, বড় একটি আয়োজনের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। বিনোদনের জন্য এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে ঊধ্বর্তন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
নৌকা বাইচ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিবের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটবে। এতে সড়কে পরিবহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরী পরিবহনগুলোকে শুধু ছাড়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, হাজার হাজার লোকজন নৌকা বাইচ দেখতে আসেন। এটি ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ। যারা সখীপুর-বাসাইল নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন তারা জানেন এই দিনে অবস্থা কী ঘটে। এতে পুলিশ বা প্রশাসনের পক্ষে হাজারো লোকজনকে নৌকা বাইচ দেখা থেকে বিরত রাখা উপায় নেই। আমরাও সেখানে যাচ্ছি, আমাদের গাড়িও সেখানে যেতে পারছে না। সেখানে পুলিশ সুপারও যাবেন। যাদের বেশি দরকার তারা নৌকা দিয়ে ঘুরে যাবে।
আপনার মতামত জানান