সোনারগাঁ জি আর স্কুলের নির্বাচন, ভোটারদের বিভ্রান্তী

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ >>
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ১১৯ বছরের ঐতিহাসিক বিদ্যাপীঠ সোনারগাঁ জি আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবক সদস্য নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে বিভ্রান্ত সাধারন ভোটার (অভিভাবক)। একটি ঐতিহাসিক বিদ্যালয়ের প্রতিক নিয়ে সর্বমহলে চলছে আলোচনা।অভিভাবকদের প্রশ্ন, তাহলে কি অনিয়মকে নিয়মে পরিবর্তন করতেই এ নির্বাচন?
জানা যায়, আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির স্কুল শাখার অভিভাবক সদস্য নির্বাচন। নির্বাচনে মাত্র তিনজন প্রার্থী অংশগ্রহন করলেও প্রতিক নাম্বার দেয়া হয়েছে ১০ পর্য ন্ত। যা অনেককে বিভ্রান্তীতে ফেলছে। ফলে অনেক অভিভাবকদের ধারনা এ নির্বাচনে মোট ১০ জন প্রার্থী অংশগ্রহন করছে। তাই তারা বাকি ৭ জন প্রার্থীর নাম জানতে চায়।

কলেজের অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, যেহেতু ৩জন প্রার্থী তাই আমরা ১,২,৩ নাম্বারকেই প্রতিক হিসেবে বরাদ্ধ দিতে চেয়েছিলাম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে প্রতিক বরাদ্ধ না থাকায়, নিয়মানুযায়ী প্রার্থীর নামের আধ্যাক্ষরের ক্রমানুসারে ভোটার নং বরাদ্ধ পাবে। প্রার্থী তিনজনের নাম আলেয়া আক্তার, আসাদুজ্জামান মোল্লা ও দুলাল মিয়া। দুজনের নামের আধ্যাক্ষর ‘আ’ হওয়ায় প্রখম দুটি অক্ষরের ক্রসানুযায়ী আলেয়া আক্তার (১), আসাদুজ্জামান মোল্লা (২) এবং দুলাল মিয়া মিয়া (৩) নং প্রতিক বরাদ্ধ পেয়েছে। আলেয়া ছাড়া বাকি দুজন এটা মানতে নারাজ। সবার দাবী (১)। বিষয়টি আমি সমাধান করতে না পেরে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকা সোনার গাঁ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) নাজমুল হুসেইন এর সহযোগিতা নিই। তিনিই এ সমাধান করেছেন।

এ ব্যাপারে আলেয়া আক্তার বলেন, নিয়মানুযায়ী আমি (১) প্রতিক পেলেও আসাদ ভাই তা মানতে নারাজ। ওনার দাবী তার নামও তো ‘আ’ দিয়ে শুরু। তাহলে তিনিই (১) পাবেন। প্রথম দুটি অক্ষর দিয়ে প্রতিক বরাদ্ধ তিনি মানেননি।দুলাল মিয়ারও দাবী (১)। আমি (১) প্রতিক ছেড়ে দেয়ার পর তাদের দুজনের মধ্যে নতুন সংকট দেখা দেয়ায় বাধ্য হয়েই এ অনিয়মকে মানতে হয়েছে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কল্যানের কথা ভেবেও সামান্য এ ব্যাপারে একমত হতে পারলাম না। এটা আমাদের আক্রোশী ও হিংসাত্মক মনোভাবের প্রকাশ। পরে ১০নং প্রতিক আমি নিয়েছি।

এ ব্যাপারে আসাদুজ্জামান মোল্লা বলেন, এটা তো কোন বিষয় না। ক্ষুদ্র বিষয় নিয়া না ভেবে কে নির্বাচিত হলে বিদ্যালয়ের কল্যান হবে সেটা ভাবতে হবে। যারা সামান্য প্রতিক নিয়ে সমঝোতা করতে পারে না, তারা নির্বাচিত হয়ে কি কল্যান করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব বিষয় নিয়ে পরে কথা বলবো।

দুলাল মিয়া জানান, আমি ঠিকই মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু আসাদ ভাই প্রথমে স্বাক্ষর করেও পরে তা মানেননি। নিয়মে যার (১) পাওয়ার কথা সে না পেয়ে অন্য কউ পেলে তা আমি মানবো কেন? তাই আমিও (১) চেয়েছি। আমি রার্নিং কমিটির নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য।

এ ব্যাপারে নাজমুল হুসেইন বলেন, তারা নিয়ম মানতে নারাজ। সবার দাবী এক নং ব্যালট। প্রার্থীদের সমঝোতার ভিত্তিতেই বিকল্প হিসেবে ৫, ৭ ও ১০ নং ক্রমিক (প্রতিক) বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম প্রধান বলেন, তিনজন প্রার্থীর জন্য ১০ পর্য ন্ত ক্রমিক বরাদ্ধ এটা কিভাবে সম্ভব, আমার জানা নেই। নির্বাচনের নিয়মে কোথাও প্রতিক বরাদ্ধের কথা উল্লেখ নেই। তবে অনেক অভিভাবক আছেন যারা নাম পড়ে ভোট দিতে পারবেন না। তাদের জন্যই ক্রমিক দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিভাবকদের অভিযোগ, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে এমন অনিয়ম মেনে নেয়া যায় না। যেখানে ১,২ ও ৩ থাকার কথা সেখানে ৫.৭,১০। এতে সাধারন অভিভাবকরা বিভ্রান্তীতে ভূগছে। অনেকের ধারনা ১০ জন প্রার্থী নির্বাচন করছে। এটা শুধু নির্বাচন নয় পুরো বিদ্যালয়েরর স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে তাদের অভিযোগ।

সোনারগাঁ জি আর ইনস্টিটউশনের প্রাক্তন ছাত্র তৌহিদুল হাসান এ বিষয়ে জানান, যারা প্রতিক বরাদ্ধের নিয়ম মানতে পারে না তারা বিদ্যালয়ের কি উন্নয়ন করবে আমার জানা নেই।

আপনার মতামত জানান