সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোকজ মেলার উদ্বোধন

প্রকাশিত



আঞ্চলিক প্রতিনিধি, সোনারগাঁ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল ৩ টায় ফাউন্ডেশনের ময়ুরপঙ্খী মঞ্চে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়।

প্রধান অতিথি আব্দুল্লাহ আল কায়সার বলেন, সোনারগাঁ হচ্ছে লোক ঐতিহ্যের সুতিকাগার। মসলিন খ্যাত এ প্রাচীন জনপদে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সহযোগিতায় লোক ঐতিহ্য ধারন, লালন এবং বিলুপ্তপ্রায় কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতেই এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এ প্রতিষ্ঠানকে বিশ^ময় করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এ লোকজ মেলা বাংলাদেশের অন্যতম এক মিলন মেলা।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব খলিল আহমদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মোঃ ইমরুল চৌধুরী, পুলিশ সুপার (ঢাকা রিজিয়ন) টুরিষ্ট পুলিশ মোঃ নাইমুল হক (পিপিএম), সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইব্রাহিম মিয়া, উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম প্রমূখ।

দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় ফাউন্ডেশনে কর্মরত কারুশিল্প প্রদর্শনী, লোকজ প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারি পণ্য সামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। মাসব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণখেলারও আয়োজন থাকছে।

লোকজ মেলায় কর্মরত কারুশিল্পীদের ৩২টি স্টলসহ ১০০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা ৬৪ জন কারুশিল্পী এই প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন। কারুশিল্পীদের কারুকাজ, হাতি, ঘোড়া, মমী পুতুল সহ বাহারি পণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁয়ের জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প-মাটির চায়ের কাপ, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, মাগুরা ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প রংপুরের শতরঞ্জি সহ ১৭ জেলার কারুশিল্পীরা মেলায় অংশ নিবেন। এছাড়াও নাগর দোলা, বায়স্কোপ ও মিঠাই-ম-ার পসরা থাকবে স্টলগুলোতে।

ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী নুরুল ইসলাম কালের কন্ঠকে বলেন, ‘দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন ও পুনর্জীবন দেওয়াই মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের মূল উদ্দেশ্য।’

তিনি জানান, লোকজ উৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালি গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভা-ারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গায়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তি-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী থাকবে।

আপনার মতামত জানান