সোনারগাঁয়ে ভুল চিকিৎসায় দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল
ডেইলি সোনারগাঁ >>
নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় একমাস আট দিনে ভুল চিকিৎসায় তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় রহমত ম্যানশনের ২য় তলায় সেবা জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মালেকা বেগম (৩৫) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ৯সেপ্টেম্বর সোমবার একই এলাকার সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গাইনি চিকিৎসক নুরজাহানের ভুল চিকিৎসায় আমান্তিকা নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। এর মাত্র ৮ দিন পর ১৭ সেপ্টেবর মঙ্গলবার চৌরাস্তার কলেজ রোডে রশিদ প্লাজার ২য় তলায় রয়েল স্পেশালাইজড হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ফারহানার ভুল চিকিৎসায় সুলতানা (২৯) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যু হয়। প্রতিটি মৃত্যুর পর স্বজনরা আন্দোলন করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রভাবের কারনে অসহায় পরিবার সঠিক বিচার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। উল্টো নানা ধরনের মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হয়। পূর্বের দুটি মৃত্যুর কোন বিচার হয়নি। রোগীর স্বজনরা মামলা করলেও আসামীরা বীরদর্পে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
নিহত মালেকার পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের রুহুল আমিনের স্ত্রী মালেকা বেগমের পিত্তথলিতে পাথর ধরা পড়ায় বৃহস্পতিবার মোগরাপাড়া চৌরাস্তার রহমত ম্যানশনের ২য় তলায় অবস্থিত সেবা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অপারেশনের জন্য কর্তৃপক্ষ ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে ২৫ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। এ সময় চুক্তি মোতাবেক হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার কে এম রিয়াজ মোর্শেদ রোগীর পিত্তথলিতে অপারেশন করেন। এক পর্যায়ে রোগীর অবস্থান বেগতিক দেখলে ডাক্তার কে এম রিয়াজ মোর্শেদ রোগীকে দ্রুত সানারপাড় প্রো-একটিভ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে কৌশলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় পালিয়ে যায়। পরে রোগীর স্বজনরা মালেকা বেগমকে প্রো-একটিভ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
সেবা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. দেবব্রত জানান, অপারেশনের পূর্বে অজ্ঞান করার জন্য এন্সথ্যাসিয়ার মাত্রা কম বা বেশি হওয়ার কারনে রোগীর অবস্থা এমন হয়েছে । তবে ডাক্তার বা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কোন ত্রুটি নেই বলে তিনি দাবি করেন।
সেবা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ড. নুরে আলম বলেন, ডাক্তারের অবহেলায় যদি রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি প্রশাসনকে সুপারিশ করবো।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার কে এম রিয়াজ মোর্শেদের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: হালিমা সুলতানা হক জানান, ঘটনাস্থলে লোকজন পাঠানো হয়েছে। আর ডা: কে এম রিয়াজ মোর্শেদ উপজেলা হাসপাতালের কোনো ডাক্তার নয়। তিনি আরো জানান, আমরা ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে ছয়টি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছি।
সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তকরে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আপনার মতামত জানান