সোনারগাঁয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে মানববন্ধন

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ >>
মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও কুমিল্লার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বালুখেকো লতিফ ও সোনারগাঁয়ের বালু সিন্ডিকেটের হাত থেকে রেহাই পেতে মানববন্ধন করেছে সোনারগাঁ উপজেলার নুনেরটেক এলাকাবাসী। গতকাল নুনেরটেক গ্রামের পূর্বপাশে ভাঙ্গন কবলিত গ্রামবাসী মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষায় প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপের দাবী জানান।

মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা জানান, মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দিনদিন এখন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী নানাভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছুই হয়নি। উল্টো আসল অপরাধীদের আড়াল করতে বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত দিনমজুরদের ধরে নিয়ে গিয়ে শাস্তি দিচ্ছে প্রশাসন। আমরা মনে করি, প্রশাসন এ ক্ষেত্রে আন্তরিক হলেই কেবল অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হতে পারে। আর সে ক্ষেত্রে ওই কাজে জড়িত মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

তারা আরও জানান, অব্যাহত বালু উত্তোলনের ফলে ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গুচ্ছগ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বালু উত্তোলনের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে কিছুদিন আগে জাকির নামের এক ব্যবসায়ী যুবক নিহত হয়েছে। এছাড়া নুনেরটেকের বালু সিন্ডিকেটের হোতা হাশেম ও জাকারিয়া গ্রামবাসীকে নিয়ে উত্তোলনকারীদের বাঁধা দেয়। এতে গ্রামর নিরিহ ৬জন টেটাবিদ্ধ হয়। পরে হাশেম, জাকারিয়া গং বারদীর তাজুল মেম্বারের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের মুল হোতা চালিভাঙ্গার লতিফ চেয়ারম্যানের সাথে আতাত করে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করছে। লতিফ চেয়ারম্যানের বালু উত্তোলন কাজে সর্বদা দেশীয় অস্ত্রনিয়ে পাহাড়ায় থাকে চালিভাঙ্গা গ্রামের মনা, শাহপরান, হামিদ, আনোয়ার, লাওয়া, খাগকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাহবুব, সায়দাবাদের আবু তালেব, মনির, কবির, জামাল ও নলচরের সানাউল্লাহ্ গং। টাকার ভাগাভাগি নিয়ে এদের মধ্যে প্রায়ই মারামারির ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজসে মেঘনা নদীর আনন্দ বাজার ও নুনেরটেক পয়েন্টে ২০-২৫টি ড্রেজার লাগিয়ে দিনরাত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন। লোক দেখানোর অভিযান চালিয়ে ড্রেজার, বাল্কহেড শ্রমিকদের জেল জড়িমানা করা হয়। কিন্তু কোনও মামলা দেওয়া হয় না মূল হোতাদের বিরুদ্ধে। ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যায় মূল হোতারা।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে মেঘনা নদীর আনন্দ বাজার, নুনেরটেক গিয়ে দেখা যায়, ২০-২৫টি শক্তিশালী ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদী বেষ্টিত নুনেরটেক। বিলীন হয়েছে ফসলি জমি।

এলাকাবাসী জানায়, একটি সিন্ডিকেট বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যদের দাপটে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে স্থানীয় এমপি বালু উত্তোলন বন্ধে ডিসি ও এসপি অফিসে ডিও লেটার দিলেও অদৃশ্য কারনে বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন।

এ লতিফ চেয়ারম্যানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর তিনি সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।

এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমান খান বলেন, আমরা যতবার অভিযানে গিযেছি তারা টের পেয়েই মেঘনা উপজেলার সীমানায় চলে যায়। তাই আইনি জটিলতার কারনে আমরা তাদেও বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত চালাতে পারিনা। এ ব্যাপাওে সার্বক্ষনিক নজরদারির জন্য নৌ পুলিশকে লিখিত চিঠি দেয়া হয়েছ, প্রয়োজনে নুনেরটেকে নৌ-পুলিশ ফাড়ির জন্য উধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

আপনার মতামত জানান