সোনারগাঁয়ে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ >>
নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ফসলি জমির টপ সয়েল বা মাটির উপরিভাগ কেটে রূপগঞ্জের ইটভাটায় বিক্রি করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কৃষকদের অসহায়ত্বের সুযোগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বদরুজ্জামান বদু’র নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী জোড়পূর্বক এসব মাটি নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য করে ইট ভাটায় বিক্রি করছে। মূলত জনপ্রতিনিধিদের নির্যািতনের ভয় এবং নগদ টাকার আশায় জমির মালিকরা মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে উর্বরতা শক্তি হারিয়ে চাষাবাদের অযোগ্য হচ্ছে কৃষিজমি। এতে ফসলহানির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

আইনের প্রয়োগ না থাকায় মাটি ব্যবসায়ীরা ইটভাটায় মাটি সরবরাহের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দালাল হিসেবে নিয়োগ দেয়।তারা সাধারণ কৃষককে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং লোভে ফেলে জমির টপ সয়েল নির্বিঘ্নে কেটে নিচ্ছেন। ফলে কৃষি উৎপাদন মারাত্মক হুমকিতে পড়তে যাচ্ছে।
জানা যায়, দেশের অধিকাংশ ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত আইন না মেনে বনের ভেতর, আবাসিক এলাকা, তিন ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায় এসব ভাটা স্থাপন করা হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সোনারগাঁয়ে আবাদি জমির পরিমাণ ৩০ হাজার ১৫০ হেক্টর। রূপগঞ্জ, আড়াই হাজার ও অন্যান্য এলাকার বিভিন্ন ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য প্রতিবছর শত একর ফসলি জমির টপ সয়েল কাটা হচ্ছে। ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে নেওয়ার কারণে ফসলের প্রধান খাদ্য বিভিন্ন জৈব উপাদানের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

উপজেলার জামপুর, সাদিপুর ও সনমান্দী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ফসলি জমির মাটি পাঁচ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত গভীর করে কাটা হয়েছে। এতে এসব ফসলি জমি ডোবায় পরিণত হয়ে পাশের জমিতে ভাঙ্গন সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে পাশির জমির মালিকও মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে।

মাটি বিক্রি করেছেন এমন চার-পাঁচজন কৃষক জানান, ইটভাটায় মাটি সরবরাহের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দালাল হিসেবে নিয়োগ দেয় ভাটার মালিকরা। তারা আবার এলাকার বখাটে ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িতদের গ্রামে গ্রামে ঘুরে টাকার লোভ দেখায়। এতে কাজ না হলে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কৃষকদের মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করে। সহজ-সরল কৃষকরা তাদের ফাঁদে পড়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে দেয়। জমির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কথা অনেক কৃষকই জানে না। আবার অনেকে ফসলের সঠিক দাম না পাওয়ায় জমির মাটি বিক্রি করে। অর্থাৎ ভয় এবং টাকার লোভেই কৃষক জমির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জামপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার বদরুজ্জামান বদু বলেন, আমি কৃসকদের ন্যায্য দাম দিয়ে মাটি কিনে ইটভাটায় বিক্রি করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আক্তার জানান, জমির টপ সয়েল বিক্রি করলে জমির উৎপাদনশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। জমির টপ সয়েল বিক্রি না করতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান