সোনারগাঁয়ে গাছে গাছে লিচুর মুকুল
ডেইলি সোনারগাঁ >>
বসন্ত ছুঁই ছুঁই এরই মধ্যে সোনারগাঁয়ে লিচু গাছে শোভা পাচ্ছে মুকুল। শাখায় শাখায় দুলছে এসব সদ্য বের হওয়া মুকুল। ফাল্গুনের আগেই সদ্য লিচুর মুকুল নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে রসিক ভ্রমরকে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রত্নতত্ত্ব সম্পদের পাশাপাশি সুস্বাদু লিচুর জন্য সুনাম কুড়িয়েছে দেশ-বিদেশে। লিচু গাছে মুকুল আসায় পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার লিচু চাষি ও বাগানিরা। গাছে মুকুল ধরে রাখতে গোড়ায় পানি সরবরাহ ও বালাইনাশক প্রয়োগ করছেন।
সোনারগাঁ’র লিচু রসে ভরা, সুস্বাদু। দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে আগে বাজারে আসে বলে এর কদর রয়েছে দেশ-বিদেশে। গত কয়েক মৌসুম ধরে দেশের অনেক এলাকায় কমবেশি লিচু চাষ হলেও, মানুষের কাছে সোনারগাঁয়ের লিচুর গ্রহণযোগ্যতাই আলাদা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে, এবারও সোনারগাঁয়ে রেকর্ড পরিমাণ লিচুর ফলন হবে বলে আশা করছেন চাষি ও বাগানিরা।
জানা যায়, এ বছর সোনারগাঁ’র প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। এ থেকে উৎপাদন আসবে প্রায় ১ হাজার টন লিচু। এ অঞ্চলের লিচুর মধ্যে কদমি ( বোম্বাই ), চায়না থ্রি, বেদেনা, এলাচি ও পাতি লিচু উল্লেখযোগ্য।
চাষি ও বাগানিরা জানান, লিচুর বাগানগুলোতে ফুল আসা থেকে লিচু আহরণ পর্যন্ত চাষিদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। ফুল আসার ১৫ দিন আগে এবং ফুল আসার ১৫ দিন পরে গাছে সেচ দিতে হয়। সে অনুযায়ী গাছে মুকুল আসার সঙ্গে সঙ্গেই মুকুলকে টিকিয়ে রাখতে ওষুধ ছিটানো শুরু হয়। আর মুকুল গাছ থেকে যাতে ঝরে না পড়ে, সে জন্য গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি ও সার ব্যবহার করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আক্তার বলেন, মুকুল দেখা দেওয়ার আগ থেকে, কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। কোন সময়ে কোন কীটনাশক, বালাইনাশক ব্যবহার করা উচিত- সে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। লিচু গাছে যে নতুন শাখা, তাতে মাকড়ের আক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। আক্রান্ত ডাল-পাতা তুলে পুঁতে ফেলতে হবে বা পুড়িয়ে দিতে হবে। অনেক সময় কুয়াশার জন্য লিচুর মুকুলে কালো ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এর জন্য ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি ৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলিয়ে ছিটাতে হবে। এর সঙ্গে কোনও রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না। আগামী তিন মাস লিচু চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রেখে তাদের সঠিক পরামর্শ দেবে কৃষি বিভাগ।
আপনার মতামত জানান