সোনারগাঁয়ে কোন ইউনিয়নে কত টাকা উন্নয়ণ কর বরাদ্ধ হয়েছে

প্রকাশিত


সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করের অর্থ প্রতিটি ইউনিয়নে চার মাস পর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে ফেরত দেওয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজ বাস্তবায়নের জন্য। সরকারি নিয়ম হচ্ছে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে সভা করে বিভিন্ন প্রজেক্ট তৈরি করে প্রজেক্টগুলো উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে অনুমোদন নিয়ে ওই অর্থ খরচ করবেন।

অভিযোগ আছে, ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে সরকারী এ অর্থ ইউপি সদস্যদের ২০/২৫ হাজার টাকা করে নগদ ভাগাভাগি করে দিয়ে বাকি টাকা কয়েকজন চেয়ারম্যান আত্মসাত করেছেন। শুধু তাই নয় সরকারি এ অর্থ উত্তোলন করতে গিয়ে চলে সীমাহীন নৈরাজ্য। ১% এ অর্থ ইউপি চেয়ারম্যানরা উত্তোলন করতে গিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের দিতে হয় ১৩% ।

একজন সাবেক চেয়ারম্যান জানান, ১% করের এ অর্থ উপজেলা থেকে উত্তোলন করতে সরকারী কর্মকর্তারা মোট ১৩% ঘুষ গ্রহন করেন। আর ১১% দিতে হয় সরকারী ভ্যাট। ১১% ভ্যাট ও ১৩% ঘুষসহ মোট বরাদ্দ অর্থের ২৪% খরচ হয়। অর্থাৎ ১ লাখ টাকা বরাদ্ধ হলে চেয়ারম্যানরা পাচ্ছেন মাত্র ৭৬ হাজার টাকা। সরকারি বিধি মোতাবেক ১১% ভ্যাট কর্তন করে ১ লাখ টাকায় ৮৯ হাজার টাকা পাবে স্থানীয় চেয়ারম্যানরা। যে টাকা দিয়ে ঐ ইউনিয়নের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা ১৩% হাতিয়ে নেওয়ায় চেয়ারম্যানরা তাদের সাথে যোগসাজেস করে ভুয়া ভাউচারে টাকা আত্মসাৎ করছে বিনা বাধায়।


গত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর এ চার মাসের জন্য সোনারগাঁয়ের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানরা যে অর্থ ইতিমধ্যে পেয়েছেন । মোগরাপাড়া ইউনিয়নে ২২ লাখ ৮০ হাজার, শম্ভুপুরায় ১৮ লাখ ১২ হাজার ৫০০, জামপুরে ৩০ লাখ ৫০ হাজার, নোয়াগাঁওয়ে ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০, সনমান্দি ২৫ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০, বারদি ১৭ লাখ ৫৫ হাজার, সাদিপুর ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০, কাঁচপুরে সর্বোচ্চ ৪১ লাখ ২৫ হাজার, পিরোজপুরে ৩০ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা, বৈদ্যেরবাজারে চেয়ারম্যান শপথ না নেওয়ায় কোনো অর্থ এখন পর্যন্ত পাননি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কয়েকটি ইউনিয়নে পূর্বে পুরো অর্থের সঠিক ব্যবহার করা হয়েছে। আবার কয়েকটি ইউনিয়নে মেম্বারদের সামান্য অর্থ দিয়ে চেয়ারম্যান, সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজস করে পুরো টাকা ভুয়া ভাউচার করে আত্মসাৎ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসীর তদারকি প্রয়োজন বলে মনে করেন উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, সরকারি এ অর্থ কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে এ তথ্য জানার অধিকার রয়েছে। কেউ তথ্য দিতে অস্বীকার করলে প্রয়োজনে তথ্য অধিকার আইনের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে প্রথম আলোর সোনারগাঁ প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মনিরের ভ্যারিফাইড ফেসবুক আইডিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।


আপনার মতামত জানান