সোনারগাঁয়ে কমার্সিয়াল আ’লীগে বিব্রত আদর্শিক আ’লীগ

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ >>
১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী কারো কারো জন্য শোক নয়, যেন উৎসবের আমেজ এনে দিয়েছে। এ সময় তারা অর্থ ও পেশী শক্তি প্রদর্শন করতে শতশত গাড়ি বহর নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও দেশপ্রেমের আদর্শের আ’লীগ নেতারা বর্তমান সময়ের কমার্সিয়াল নেতাদের অর্থ ও নির্লজ্জতায় বিব্রতবোধ করেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাকমীরা। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা, এভাবে চলতে থাকলে এক সময় রাজপথের নেতারা স্বেচ্ছায় ঘরবন্দী হয়ে যাবেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

১৫ আগষ্ট সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা যায়, ত্যাগী নেতারা সকাল থেকে বঙ্গবন্ধুর নামে কোরআন খতম ও দোয়ার মাহফিল সহ সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিয়ন ও মহল্লায় কাঙ্গালি ভোজের আয়োজন করেছেন। সোনারগাঁয়ের আদর্শিক নেতা সাবেক এমসিএ ও বঙ্গবন্ধুর সহচর এবং সোনারগাঁ আ’লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাজেদ আলী মোক্তারের যোগ্য উত্তরসুরী উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মরহুম আবুল হাসনাতের পরিবার দীর্ঘ ৬৭ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকা উড়িয়ে চলেছেন। বর্তমান সময়ে মরহুম আবুল হাসনাতের সুযোগ্য উত্তরসুরী সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, সাজেদ আলী মোক্তারের ছেলে মোগরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান, দেওয়ানউদ্দিন চুন্নু সহ অনেক নেতাকর্মী এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও তাদের সন্তানেরা মূলধারার আদর্শিক রাজনীতিতে সক্রিয়।

ব্যতিক্রম সোনারগাঁয়ের নব্য আ’লীগ হিসেবে পরিচিত ডা.আবু জাফর চৌধুরী বিরু। তিনি শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে শো-ডাইন করে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সোনারগাঁয়ের অাদর্শিক নেতাদের হাতে গড়া ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের একাংশের কমার্সিয়াল নব্য নেতারা বিরুর দলে যোগ দিয়েছেন। কমার্সিয়াল নেতারা আদর্শিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে টেন্ডার ও দখল বানিজ্যসহ অন্যান্য পন্থায় আর্থিক সুবিধা না পেরে ক্লিন ইমেজের নেতাদের ছেড়ে নব্য কমার্সিয়াল নেতাদের সাথে হাত মিলিয়েছেন।

তৃণমূল আ’লীগের নেতাকর্মীরা জানান, জামাত, বিএনপি পরিবারের সদস্য ডা. বিরু হাসনাত পরিবারের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করলেও মাহফুজুর রহমান কালাম ও সাংসদ লিয়াকত হোসেস খোকার সাথেও সক্রিয় ছিলেন।

গাজী মুজিবুর রহমান বলেন, আমার বাবা ৬৬ সাল থেকেই সোনারগাঁয়ের আ’লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি সোনারগাঁ আ’লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। উত্তরাধীকার সুত্রে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করতে গিয়ে মামলা, হামলা সহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি। নির্যাতিত হয়ে বারবার কারাবরণ আমি নিঃস্ব হলেও গর্ববোধ করি। কারন আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে একমূহুর্তের জন্যে বিচ্যুত হইনি। আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক।

মাহফুজুর রহমান কালাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন আওয়ামী লীগকে বিষমুক্ত করতে রাজাকার পরিবারের সদস্যদের অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছেন, সেখানে সোনারগাঁয়ের আওয়ামী লীগকে স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে তুলে দিয়ে দলকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে মেতেছে একটি কুচক্রী মহল।আমরা তাদের ষড়যন্ত্র ভেঙে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি পূণঃপ্রতিষ্ঠা করবোই।

সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত জানান, যারা টাকা দিয়ে কর্মী কিনে আ’লীগের রাজনীতি করকে চায় তারা বোকার স্বর্গে বাস করে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা কখনো টাকায় বিক্রি হয় না। সুসময়ের রাজনীতি আর দুঃসময়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের রাজনীতি এক নয়। তবে আমি মনে করি সোনারগাঁ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে জামাত বিএনপির দোসররা বিরুকে অার্থিকভাবে সহযোগিতা করছে। আমরা রাজনীতি করি, দলের প্রয়োজনে যে কোন সময় নেত্রীর ডাকে রাজপথের সংগ্রামে প্রস্তুত। দীর্ঘ ৬৭ বছর ধরে সোনারগাঁয়ের আওয়ামী লীগকে বুকে আগরে রেখেছি। আজীবন রাখব। নেতা নয় প্রধানমন্ত্রীর কর্মী হয়ে বেচে থাকতে চাই।

আপনার মতামত জানান