শেয়ারবাজারে বড় দরপতন

প্রকাশিত



ভিসানীতির খবরে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন
নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশি কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি বাস্তবায়ন শুরু করেছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। এতে দুই বাজারেই কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির বিষয়টি। লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে এ নিয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে আলোচনা বাড়তে থাকে এবং শেয়ারবাজারেও দরপতন বড় হতে থাকে।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভিসানীতির বিষয়টি জানানো হয়। এতে কারও নামোল্লেখ করা না হলেও যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাদের বিষয়ে বলা হয়- এরা বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিচারবিভাগের সদস্য এবং নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য।


এতে বলা হয়, আজ পররাষ্ট্র বিভাগ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করেছে বা এর জন্য দায়ী কিছু বাংলাদেশি নাগরিকের ওপর ভিসানীতি দেওয়ার পদক্ষেপ নিচ্ছে। ভিসানীতির আওতায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক বিরোধীদল।

যাদের ওপর ভিসানীতি দেওয়া হচ্ছে সেসব ব্যক্তি তা তাদের পরিবারের সদস্যরা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে বলা হয়, ভবিষ্যতে আরও কোনো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া ক্ষুণ্ন করা বা এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তারাও একই ভিসানীতির আওতায় পড়তে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এ ভিসানীতি ঘোষণা আসার পর শেয়ারবাজারে আজ প্রথম লেনদেন হয়। লেনদেনের শুরুর দিকে বেশি প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়লেও ধীরে ধীরে দাম কমার তালিকা বড় হয়। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে মাত্র ১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৮টির এবং ১৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫০০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৭৩৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৩৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৬০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ২০ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২০ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিডিকম অনলাইন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, জেমিনি সি ফুড, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮০টির এবং ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

আপনার মতামত জানান