রাজিবপুর রৌমারী মহাসড়ক এখন মরনফাদ
সোহেল রানা স্বপ্ন রাজিবপুর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর – রৌমারী ডিসি রাস্তাটিতে বড় বড় গর্তের ফলে রাস্তাটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রৌমারী থেকে রাজিবপুর হয়ে ঢাকাগামী মহাসড়কটির কুড়িগ্রাম অংশের ধুলাউড়ি থেকে কর্তিমারী পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তায় বড় বড় খানা খন্দ সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
প্রায় চার বছর আগে রাস্তা প্রশস্তকরণ এবং সংস্কারকাজ শুরু হলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির ও কাজে ধীরগতির কারণে দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষ।
দেখাগেছে সংস্কার হতে যাওয়া রাজিবপুরের ধুলাউড়ি থেকে কর্তিমারী বাজার পর্যন্ত একেবারে নাজেহাল অবস্থা। উন্নয়নকাজের যন্ত্রপাতি, মালামাল ও খোঁড়া মাটি রাস্তার পাশে ফেলে রাস্তা প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । দীর্ঘদিন ধরে এগুলো রাস্তায় পড়ে থাকায় যানবাহন চলাচলে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। রাজিবপুর উপজেলা শহরে যেতে শিবের ডাঙ্গী, মরিচাকান্দি, বালিয়ামারী, সায়দাবাদসহ উত্তরের দুই উপজেলা এবং গাইবান্ধা সদরের মোল্লার চর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের একমাত্র প্রধান সড়ক এটি।
সরেজমিন দেখাযায় রাজিবপুর উপজেলায় মহাসড়কের শিবের ডাঙ্গী বাজারের জামে মসজিদের সামনে রাস্তার দু’ধারের মাটি সরে গিয়ে রাস্তা ভেঙে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রাতে এই গর্তে রৌমারী থেকে ঢাকাগামী রিফাত পরিবহন চাকা আটকে গিয়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ট্রাক, বাস, পিকআপ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেলসহ শত শত যানবাহনের লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয় এবং প্রতিনিয়ত মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো ডুবে কাঁদা সৃষ্টি হয়। যার ফলে এ রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা যায় না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে কুড়িগ্রামে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের আওতায় রাজিবপুরের ধুলাউড়ি থেকে রৌমারী দাঁতভাঙ্গা পর্যন্ত। প্রায়২৯ কিলোমিটার সড়ক যার প্রশস্ত ৩০ ফুট উন্নয়নে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয় তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এরমধ্যে রাজীবপুরের ধুলাউড়ি থেকে রৌমারীর কর্তিমারি পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার চুক্তি মূল্য প্রায় ৪৮ কোটি টাকা। কাজের দায়িত্ব পান মীর হাবিবুল আলম কনস্ট্রাকশন। কাজের গাফিলতি ও ধীর গতির কারণ জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বাস চালক রাজু মিয়া বলেন এই রাস্তা দিয়ে একবার ঢাকায় যেতে সব সময় দুর্ঘটনার চিন্তায় থাকতে হয় কখন যেনো দুর্ঘটনা ঘটে আর ঠিকমতো যদি ঢাকা থেকে ফিরে আসা যায় তাহলে গাড়ি অবশ্যই মেরামতের জন্য অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়।
শিবের ডাঙ্গী গ্রামের অটোরিকশা চালক মিজান আলী জানান- দেশের কত রাস্তা ঠিক হচ্ছে, কিন্তু আমাদের রাস্তা হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে মনে হয় আমরা এ দেশের জনগণ না। তিনি আরও বলেন, ভাঙা রাস্তার কারণে অটো বেশিরভাগ সময়ই টেনে নিতে হয়।
রাজিবপুর সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার জানান বাংলাদেশ এবং ভারতের গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক হচ্ছে রৌমারীর তুরা রোড এছাড়াও রাজিবপুরের বালিয়ামারীর বর্ডার হাটটিও এই মহাসড়কের অদুরেই অবস্থিত। এই পথে ভারত থেকে পাথর কাঁচামালসহ বিভিন্ন প্রকার পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হয়। কিন্তু রাস্তার এইরুপ বেহাল দশার কারণে আমদানি রপ্তানি প্রায় বন্ধের পথে।
রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত চক্রবর্তী জানান।ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতার কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। আমি যোগদান করেছি এক বছররে বেশি সময় ধরে। যোগদানের পর থেকে রাস্তায় কোন কাজ হয়নি। এখন পর্যন্ত সেই অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় আমি ডিসি মহোদয়কে অনুরোধ করছি যাদের দ্রুত সময়ে আমাদের এই রাস্তাটি সংস্কার করে আমাদের এই নাজেহালের হাতথেকে রক্ষা করেন।
আপনার মতামত জানান