মোবাইলের সুত্র ধরে শাকিল হত্যা রহস্য উদঘাটন, আসামী গ্রেফতার
সদ্য বিবাহিত আরিফ চৌধুরী অর্থ সংকটে ভূগছিলেন। গাউছিয়া স্ট্যান্ডে পরিচয় হয় অটোরিক্সা চালক শাকিলের সাথে। অর্থসংকটে পড়া আরিফের লোভী চোখ পড়ে শাকিলের অটো রিক্সার দিকে। মনে মনে পরিকল্পনা করে অটো রিক্সা ছিনতাইয়ের। পরিকল্পনা মতো শাকিলের মোবইল নাম্বার রেখে দেয়। তার পরিকল্পনায় যোগ দেয় লোভী আমিনুল ইসলাম। ৭/৮ দিন আগে পরিচয় হওয়া শাকিলকে ঘটনার দিন বিকেলে ফোন দেয় অরিফ। বন্ধুর ফোন পেয়ে শাকিল অটোরিক্সা নিয়ে গাউছিয়া আসার পর সোনারগাঁয়ের পেরাবতে অবস্থিত তাজমহলে যাওয়ার কথা বলে রিক্সায় উঠে আরিফ ও আমিনুল। গজারিয়া পাড়ার রাস্তার পাশে যেতেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শাকিলকে অটোরিক্সা থেকে নামিয়ে গলায় থাকা মাফলার দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হতে শাকিলের দুই চোখে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। পরে শাকিলের পকেটে থাকা টাকা, মোবাইল ও অটোরিক্সা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
তাদের কাছ থেকে ৪০০ টাকায় মোবাইল ফোন কিনেছিল সোহানা এবং ৯ হাজার টাকায় অটোরিক্সা কিনে আরব আলী। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইলের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে দীর্ঘ ২ বছর পর সেই ফোনের খোঁজে ঘরের দরজায় কড়া নেড়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সোহানার দেওয়া তথ্যে বেড়িয়ে এসেছে মোবাইলের বিক্রেতা আমিনুল ইসলামের নাম। পরে আমিনুলের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার সহযোগী আরিফ চৌধুরী ও চক্রের সদস্য আরব আলীকে। তাদের দেওয়া জবানবন্দীতে উদঘাটন হয় সোনারগাঁয়ের অটোরিক্সাচালক শাকিল হত্যার রহস্য। এ ঘটনায় আরব আলীকে চোরাই অটোরিক্সা জানার পরেও কিনার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পিবিআই সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের গজারিয়া পাড়া এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে শাকিলের লাশ উদ্ধার করে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। ১৩ নভেম্বর এ ঘটনায় ৩০২/২০১ ও ৩৪ পেনাল কোডে সোনারগাঁ থানায় মামলা করে নিহতের বড় ভাই মো. সজিব। ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে ১৯ সালের ৬ জানুয়ারী পর্যন্ত তদন্ত করে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। পরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে পিবিআইয়ে ন্যস্ত করা হয় ক্লু’লেস মামলাটি। ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় পিবিআই তদন্ত। গতানুগতিক তদন্তের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় ১ বছর ৭ মাস পর চাঞ্চল্যকর ও নির্মম হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করা হলো।
আপনার মতামত জানান