মিরাজ ঝড়ে লন্ডভন্ড প্রোটিয়াসরা
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশি স্পিনারদের জয়জয়কার চলছে। তিন প্রতিষ্ঠিত পেসার এখনও উইকেটশূন্য থাকলেও সাকিব-মিরাজ তুলেছেন ঘূর্ণিঝড়। এবার মেহেদী মিরাজের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে গেলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। ৫৩ বলে ৬২ রান তুলে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই সেরা ব্যাটসম্যান। ডেভিড ‘কিলার’ মিলারের সঙ্গী হয়েছেন ভ্যান ডার ডাসেন। ২৭.২ ওভারে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৫০ রান। জয়ের জন্য প্রায় ৮ রানরেটে তাদের করতে হবে আরও ১৮১ রান।
লন্ডনের কেনিংটন ওভালে বাংলাদেশের দেওয়া বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে বেশ ভালোই জেঁকে বসেছিলেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক এবং এইডেন মার্করাম। উদ্বোধনী জুটিতে এসে যায় ৪৯ রান। ঠিক তখনই ব্রেক থ্রু। মেহেদী মিরাজের বলে রান নিতে গিয়ে দুজনের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগে উইকেটের অনেকটা পেছন থেকে সরাসরি থ্রোতে উইকেট ভাঙেন মুশফিক। ডি কক ফিরেন ৩২ বলে ২৩ রান করে। পঞ্চশোর্ধ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙেন সাকিব। ৫৬ বলে ৪৫ রান করা এইডেন মার্করাম সরাসরি বোল্ড হয়ে যান সাকিবের বলে।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৩০ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। প্রথম থেকেই হাত খুলেন সৌম্য সরকার। অন্যপ্রান্তে তামিম ছিলেন ধীরস্থির। লুঙ্গি এনগিডি এবং কাগিসো রাবাদাকে দিয়ে বোলিং ওপেন করান ফাফ ডু প্লেসিস। দুজনকেই বেদম প্রহারের শিকার হতে হয়েছে সৌম্যর কাছে। বিধ্বংসী সৌম্যর সঙ্গে তামিমের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৭ ওভারে টাইগারদের স্কোর ৫০ স্পর্শ করে। তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছিল রানের চাকা। ফেলুকায়োর বল তামিমের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটকিপার কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে জমা নিলে তামিমের ২৯ বলে ২ চারে ১৬ রানের ইনিংস শেষ হয়। সৌম্য সরকারের সঙ্গে তার ওপেনিং জুটি হয়েছিল ৬০ রানের।
সৌম্যর সঙ্গী হন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ১২ ওভারের মধ্যে চার বোলার ব্যবহার করে ফেলেছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। যার একটিই কারণ- সৌম্য সরকারের রুদ্ররূপ। ক্রিস মরিসের একটি শর্ট বলে মিস টাইমিং করে উইকেটকিপার কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ৩০ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৪২ রান করা সৌম্য। দুই ওপেনারকে হারানোর ধাক্কা সামলে দেন সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। ক্রিস মরিসকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৫৪ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ৪৩তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। অন্যদিকে ফেলুকায়োকে বাউন্ডারি মেরে ক্যারিয়ারের ৩৪তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে মুশফিক খেলেছেন ৫২ বল।
মাত্র ৩২ ওভারেই দুইশ ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশের স্কোর। ১৪২ রানের রেকর্ড জুটি অবশেষে ভাঙে সাকিবের বিদায়ে। ৮৪ বলে ৮ চার ১ ছক্কায় ৭৫ রান করে বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার ইমরান তাহিরের বলে বোল্ড হয়ে যান। মুশফিকের সঙ্গী হয়ে মোহাম্মদ মিঠুনও হাত খুলে মারতে থাকেন। তবে ২১ বলে ২১ রান করে তিনি ইমরান তাহিরের দ্বিতীয় শিকার হন। সাকিবের পর সেঞ্চুরি হয়নি মুশফিকেরও। তার ৮০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৭৮ রানের ইনিংসটি থামে ফেলুকায়োর বলে ভেন ডার ডাসেনের তালুবন্দি হয়ে।
উইকেটে জুটি বাঁধেন দুই ‘মমিসিঙ্গা’ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এই দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে তিনশ ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশের স্কোর। ৪৯তম ওভারের শেষ বলে মরিসের শিকার কহন ২০ বলে ২৬ রান করা মোসাদ্দেক। দুজনের জুটিতে এসেছে ৬৬ রান। ৩৩ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৪৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষদিকে নেমে একটি বাউন্ডারি হাঁকান মেহেদী মিরাজ। টাইগারদের বিপক্ষে মোট ৭ বোলার ব্যবহার করেছেন ফাফ ডু প্লেসিস।
আপনার মতামত জানান