ভুয়া ডিগ্রি-অভিজ্ঞতায় বিসিএস কর্মকর্তা
ভুয়া ডক্টরেট ডিগ্রি ও অভিজ্ঞতার সনদ ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে নিয়োগ পেয়েও শেষ রক্ষা হয়নি সহযোগী অধ্যাপক এস এম আলমগীর কবীরের।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. সহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, পিএসসি থেকে ২০০৬ সালে অভিযুক্ত এস এম আলমগীর কবীর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১০ শতাংশ কোটায় সহযোগী অধ্যাপক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) পদে নিয়োগ পান। পিএসসির ওই নিয়োগ চারটি শর্ত ছিল। সেগুলো হচ্ছে- ১. প্রার্থীদের ডক্টরেট ডিগ্রিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা দ্বিতীয় শ্রেণির সম্মান ডিগ্রিসহ কলেজ যা বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম ৮ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা। ২. প্রার্থী যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করেছেন সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক চরিত্রগত সনদ। ৩. প্রার্থী যেসব সরকারি/বেসরকারি কলেজ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন সে সব কলেজ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডিগ্রি কলেজ/অথবা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের হতে হবে এবং তার অর্জিত শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ডিগ্রি পর্যায়ের অভিজ্ঞতার সনদে তা অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে। ৪. অভিজ্ঞতার সনদে কলেজটি ডিগ্রি কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় এবং অর্জিত অভিজ্ঞতা ডিগ্রি পর্যায়ের না থাকলে এবং অভিজ্ঞতার সনদ জমা না দিয়ে যোগদানপত্র জমা দিলে প্রার্থিতা বাতিল হবে।
তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান বলছে, এস এম আলগীর কবীরের আবেদনের সঙ্গে মালয়েশিয়ার কামডেন ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ডিগ্রি সংযুক্ত করেছেন কিন্তু দেশটিতে ওই নামের কোন রেজিস্ট্রার্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। সেই সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক পদে চাকরির আবেদনের জন্য ন্যূনতম ৮ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার মধ্যে ২ বছর ৩ মাস ১১ দিনের ঘাটতি ছিল। এই হিসাবে এস এম আলগীর কবীর চাকরির আবেদনে ডক্টরেট ডিগ্রি ও অভিজ্ঞতায় প্রতারণা করেছেন। তিনি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পদ থেকে প্রেষণে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এপিএস এবং পরবর্তীতে তৃতীয় সচিব হিসেবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশন কর্মকালীন সরকারি কর্মচারী হয়ে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।
এসব জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় এস এম আলগীর কবীরের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।
আপনার মতামত জানান