ভাই-বোনকে বাঁচিয়ে নিজে প্রাণ দিলেন আরেক বোন
মাত্র ২১ বছর বয়সেই মারাত্মক এক গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সৌদি তরুণী রিমা মান্না রশিদ। তবে তাঁর এমন মৃত্যুকে নায়কোচিত এবং সাহসী বলে আখ্যায়িত করছেন সৌদি আরবের সাধারণ মানুষ। মূলত নিজের প্রাণ দিয়েই ছোট তিন ভাই-বোনকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন তিনি।
গতকাল শনিবার গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক দিন পরই সৌদি আরবের কিং খালিদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ার পোর্টে নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল রিমার। তবে চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপনে যাচ্ছিলেন তিনি। গন্তব্য ছিল রিজাল আলমা প্রদেশের হাসওয়া নামে একটি গ্রাম। পথে একটি পাহাড়ি রাস্তায় তাঁদের বহন করা গাড়িটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়।
এ অবস্থায় বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য গাড়ি থেকে নেমে যান রিমার বাবা ও বড় ভাই। কিন্তু তারপরই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনাটি। গাড়িটি হঠাৎ পাহাড়ি ঢাল বেয়ে তীব্র বেগে ছুটতে শুরু করে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেও অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে গাড়িতে থাকা ছোট দুই ভাই-বোনকে অনেক চেষ্টায় বাইরে ছুড়ে মারেন রিমা। তবে ভাই-বোন বেঁচে গেলেও নিজে শেষ পর্যন্ত রেহাই পাননি। প্রায় ৪০০ মিটার নিচে গিয়ে আছড়ে পড়ে গাড়িটি এবং এটি তিন টুকরো হয়ে যায়। মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রিমা।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রিমার বাবা জানান, রিমা চাইলেই নিজেকে বাঁচাতে পারতেন। কারণ, তিনি দরজার পাশেই বসেছিলেন। তবে তিনি এটি না করে ছোট দুই ভাই-বোনের প্রাণ বাঁচানোকেই বেছে নিয়েছেন।
তাঁর বাবা বলেন, ‘সে আমাদের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছে। আমার সাহসী কন্যা তার সময়ের মেয়েদের চেয়ে এগিয়ে ছিল।’
রিমার মৃত্যুর খবরটি দিয়ে তাঁর এক আত্মীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘পরিবারের প্রতি রিমার ভালোবাসার কথা সবাই জানে। জীবন উৎসর্গ করার আগে ভাই-বোনদের কাছে মায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। শেষ নিশ্বাস দিয়ে তিনি তাঁদের রক্ষা করে গেছে।’
রিমার এমন আত্মাহুতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন সৌদি আরবের আরও অসংখ্য মানুষ।
আপনার মতামত জানান