বৈদ্যের বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঝে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

প্রকাশিত

সোনারগাঁয়ের আলোচিত বৈদ্যের বাজার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটার ও নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তারা জানান ভোটাররা যদি নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দিতে পারে তবে ২০১৬ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রউফ ও মাহবুব সরকার দু’জনই শক্ত প্রার্থী হওয়ায় ভোটের লড়াই বেশ হাড্ডাহাড্ডি হবে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। তবে আল-আমিন সরকার যদি কোন চমক দেখাতে না পারেন তবে পূর্বের অবস্থানে থাকবেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আল-আমিন সরকারের নৌকা প্রতিককে তৃতীয় অবস্থানে রেখে মাহবুব সরকারের আনারস প্রতিককে মাত্র ২৯ ভোটে পরাজিত করে ২০১৬ সালে বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ডা. আব্দুর রউফ ঘোড়া প্রতিকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিগত নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর চেয়ারম্যান হিসেবে দীর্ঘদিনের উন্নয়ন বঞ্চনা ও জনভোগান্তি থেকে ইউনিয়ন বাসীকে মুক্তি দিতে তিনি কাজ করেছেন। এ ছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে জনসেবায় নিবেদিত ছিলেন ডা. আব্দুর রউফ।

অন্যদিকে মাহবুব সরকার দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তেজস্বী ও বক্তৃতায় পারদর্শী ও মাঠ কাঁপানো এই নেতা প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি তার নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন। বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের শতাধিক নিরপেক্ষ ভোটারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, এবারো ঘোড়া ও আনারস প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লাড়াই হবে।

ডা. আব্দুর রউফ বলেন, আমি সবসময় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনেও জনগণের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই। তিনি আরো জানান, বর্তমান মেয়াদে তার অসমাপ্ত এবং পরিকল্পনাধীন কাজগুলো সমাপ্ত করে বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নকে একটি উন্নত, পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য ইউপি হিসেবে তিনি গড়ে তুলতে চান। এ জন্য তিনি আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ভোটারদের দোয়া ও সমর্থন কামনা করেছেন।

মাহবুব সরকার বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত। আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ভোটারদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে তাতে প্রমাণিত হয় আমার জয় অপ্রতিরোধ্য।

জানা যায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করেন আল-আমিন সরকার। সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগের মাঝে রয়েছে নানা অন্তর্দ্বন্দ্ব। এসব দ্বন্দ্ব-কলহ নিরসনের পাশাপাশি ভোটের লড়াইয়ে জয়লাভ করতে নানা কৌশল এবং প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলেও নেতারা রয়েছেন নিরব ভুমিকায়। নির্বাচিত হলে উন্নয়ন ও আমূল পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন তিনি।


সরেজমিন বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে জানা যায়, ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নে জমে উঠেছে ভোটের লড়াই। এখানে হাড্ডাহাড্ডি ভোটের লড়াই হবে স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর মাঝে। হেভিওয়েট দুই প্রার্থীই জমজমাট প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় সরগরম উপজেলার বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন। এদিকে গোষ্ঠীগত দাঙ্গাবাজ খ্যাত এ ইউনিয়নে ভোটারদের মাঝে রয়েছে চরম আতঙ্ক। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রুপগুলো যে কোনো সময় দাঙ্গা-হাঙ্গামায লিপ্ত হতে পারে এমন আশঙ্কাও সাধারণ ভোটারদের মাঝে। ভোটের দিন পর্যন্ত এলাকায় যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে এমন প্রত্যাশা এলাকার সাধারণ ভোটারদের।

খংসারদী, হামছাদী, হামছাদী ধনপুর, বৈদ্যের বাজার ও দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আনন্দ বাজা কারিমিয়া মাদ্রাসা সহ ৬টি কেন্দ্র অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন সাধারন ভোটার ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, নৌকার এজেন্টদের সামনে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতিকে সিল মারতে নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকরা ভোটারদের নানা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, সোনারগাঁয়ে ইতিমধ্যে আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করে প্রমান করেছি নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ।যারা পেশিশক্তি প্রদর্শন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন নির্বাচনে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।


সোনারগাঁ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্না জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো রেকি করেছি। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।

আপনার মতামত জানান