বৈঠকের আগেই বাইডেনকে হুশিয়ারি এরদোগানের

প্রকাশিত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। এ বৈঠকের আগেই যুক্তরাষ্ট্রকে হুশিয়ারি দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, তুরস্ককে এভাবে যারা কোনঠাসা করার চেষ্টা করবে তারা গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুকে হারাবে। তুরস্ক ন্যাটোর শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য সহযোগী।

মঙ্গলবার তুরস্কের টেলিভিশন চ্যানেল টিআরটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সামরিক জোট ন্যাটো’র সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের মধ্যে প্রথমবারের মতো সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই দেশটির প্রতি এ হুশিয়ারি দিলেন তিনি।

সাক্ষাৎকারে আঙ্কারা-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ‘তুরস্ককে যারাই কোনঠাসা করতে চাইবে, তারা সবাই মূল্যবান একটি বন্ধু হারাবে।’

গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তুর্কি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পাননি জো বাইডেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে প্রথমবারের মতো ফোন করতেও বাইডেন সময় নেন তিন মাস।

রদোগান বলেন, বৈঠকে আমরা জিজ্ঞাসা করবো, সম্পর্কের ক্ষেত্রে কেন তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্র এত উত্তেজনাপূর্ণ সময় পার করছে।
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ১৪ জুন অনুষ্ঠেয় সম্মেলনের সাইডলাইনে এরদোগান-বাইডেন বৈঠকে মিলিত হবেন।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি বারাক ওবামা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করেছি। তাদের কারও সঙ্গেই সম্পর্ক এত উত্তেজনাপূর্ণ ছিল না।

অটোমান বাহিনীর হাতে ১৯১৫ সালে আর্মেনিয়ার ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যুকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেন বাইডেন। এতে ন্যাটোর দুই সদস্য দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।

তিনি বাইডেনের সমালোচনা করে বলেন, ইতিহাসবিদ এবং আইনজ্ঞদের এ বিষয় নিয়ে কাজ করা উচিত, কোনো রাজনীতিকের নয়।

এর পেছনে বাইডেনের কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা জানতে চাইলে এরদোগান বলেন, ‘তুরস্ক এ ধরনের বিষয়ের সঙ্গে অভ্যস্ত।’

‘যদি তুমি মিত্র হও তাহলে আমাদের সঙ্গে দাঁড়াও, শত্রুদের সঙ্গে নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, তারা সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে’, যোগ করে রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। ‘শক্তিশালী তুরস্ক’ ছাড়া ন্যাটো শক্তিশালী থাকবে না বলে উল্লেখ করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

প্রসঙ্গত, রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কিনেছে তুরস্ক। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এরমধ্যে অটোমান বাহিনীর হাতে ১৯১৫ সালে আর্মেনিয়ার ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যুকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ ফলে সম্পর্ক আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে যায়। এবার সে সম্পর্ক ঝালাই করে নেওয়ার উদ্যোগ নিতে চাইছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। তিনি দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।

সূত্রঃ যুগান্তর

আপনার মতামত জানান