বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলীয় পদ-পদবী থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্তে অটল প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত

দলীয় পদ হারাচ্ছেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের ২০০ নেতা। তারা সবাই উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। এদের অনেকেই উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বা জেলা-উপজেলার সহ-সভাপতি-যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন। অন্যদিকে এসব বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রণোদনা জুগিয়েছেন ও দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছেন এমন অর্ধশত এমপি-নেতাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরও শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বিদ্রোহীদের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি ও কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হবে। দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, পাঁচ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সারা দেশে প্রায় ৫ শতাধিক নেতা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। এর মধ্যে দুই শতাধিক নেতা স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্বশীল পদ-পদবীতে রয়েছেন। যারা পদে নেই, তাদের আপাতত চিঠি দেওয়া হচ্ছে না। চিহ্নিত করে রাখা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের আট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকরা ইতিমধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই চূড়ান্ত চিঠি দেওয়া হবে।
দলীয় সূত্র জানায়, এর আগেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অনেক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দল। তবে এবার আর কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। সে কারণে প্রথমে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের। পরবর্তীতে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে আগামীতে এসব ব্যক্তি যেন দলের পদ-পদবীতে আসতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসব বিদ্রোহীর মদদদাতাদের ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের পদ-পদবীতে থেকে অব্যাহতি দেওয়া না হলেও ‘সময় মতো’ উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীদের আমরা দলীয় পদ-পদবী থেকে অব্যাহতি দিচ্ছি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে চিঠি দেওয়া হবে।’
মদদদাতাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, ‘নানাভাবে আমরা তাদের শাস্তি দেব। ধরুন যারা এমপি আছেন, তাদের আগামীতে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করব। দলের সম্মেলনে যারা পদ-পদবীতে আসতে চাইবেন তাদের স্থান দেওয়া হবে না। শুধু বহিষ্কারই যে শাস্তি তা কিন্তু নয়, নানাভাবে শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।’
আর দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে যারা নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিলেন, তাদের আমরা দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেব। ইতিমধ্যে ২০০ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আরও তদন্ত চলছে।’ আগেও এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু কার্যকর হয়নি।
এ প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘এবার দৃশ্যমান করবই। নেত্রী এ ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। ব্যবস্থা নিতেই হবে। কারণ নৌকার মালিক কে? কে স্বাক্ষর করে নৌকা দিয়েছিলেন? যারা নেত্রীর সিদ্ধান্ত অমান্য করেন তারা আগামীতে যে কোনো কাজ করতে পারবে। দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো। ক্ষমতায় থাকতে দলকে শৃঙ্খলায় রাখতে না পারলে ভবিষ্যৎ খারাপ আছে।’
খবর: বাংলাদেশ প্রতিদিন (আংশিক)

আপনার মতামত জানান