বসুন্ধরা ৭ দিনে ৫ হাজার বেডের হাসপাতাল করবে, ১০ কোটি টাকা অনুদান
বৈশ্বিক মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। বাদ যায়নি বাংলাদেশও। এরইমধ্যে দেশে ৪৮ জনের শরীরে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। মারা গেছেন ৫ জন। তাই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
এ অবস্থায় মানবসেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গ্রুপের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ১০ কোটি টাকা অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।
ইষ্ট ওয়েষ্ট মিডিয়াগ্রুপ ও বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ার আহমেদ আকবর সোবহান করোনা ভাইরাস রোগীদের জন্য মাত্র ৭দিনে চীনের উহানের চেয়েও বড় ৫ হাজার শয্যার হাসপাতাল করার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেন। আজ ২৯ মার্চ বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এ প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুদানের চেক গ্রহণ প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন। অনুদানের চেক প্রদানের পর বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন।
এসময় বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার ও বসুন্ধরা ট্রেড সেন্টারকে করোনা চিকিৎসা ও কোয়ারেন্টিন হাউস হিসেবে ব্যবহার করতে প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর।
অতীতের বিভিন্ন সময়ের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধন্যবাদ জানান।
বসুন্ধরা গ্রুপ ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আর্থিক অনুদান এবং পিপিই ও মাস্ক দেয়।
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সেনাবাহিনী ২৫ কোটি টাকা, নৌবাহিনী ৪ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৩ টাকা, বিমান বাহিনী ১ কোটি ২০ লাখ টাকা, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ১ কোটি টাকা, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ১ কোটি টাকা অনুদান দেয়।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, সীমান্তরক্ষা বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব, জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস অনুদানের চেক গ্রহণ করেন।
গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ওরিয়ন গ্রুপ ৩ কোটি টাকা, নাভানা গ্রুপ ২৫ লাখ টাকা, হোসাফ গ্রুপ ৫ কোটি টাকা, আবুল খায়ের গ্রুপ ৫০ লাখ টাকা, সামিট পাওয়ার লিমিটেড ৩ কোটি টাকা, কনফিডেন্স পাওয়ার কোম্পানি ৩ কোটি টাকা, দি ওয়েস্টিন হোটেল ২ কোটি, লা মেরিডিয়ান ২ কোটি টাকা অনুদান দেয়।
সিএমসি-চায়না ১০ লাখ মাস্ক, ১০ হাজার পিপিই এবং কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স ১০ হাজার পিপিই দেয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে।
আপনার মতামত জানান