পৌর নির্বাচন আ’লীগের ‘অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই’

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ :
সোনারগাঁ পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনকে হাসনাত পরিবার ও সোনারগাঁয়ের মূলধারার আওয়ামী লীগের ‘অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই’ হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকলেও সোনারগাঁয়ের সংসদ সদস্য হিসেবে দ্বিতীয় বারের মতো শপথ নিয়েছেন জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। খোকা রাজনৈতিক কুটচাল, দলীয় কোন্দল ও রাজনৈতিক বিদ্ধেষের কারনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ একে বারেই কোন ঠাসা অবস্থায়। এমপি’র পর এবার সোনারগাঁ পৌর মেয়রের চেয়ার নিজেদের মধ্যে রাখতে জোড়ালোভাবে মাঠে নেমেছেন এমপি। মেয়র পদে নির্বাচিত হলে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কফিনে শেষ পেরেক বসিয়ে দিবে।

জাতীয় পার্টি তাদের পরিকল্পিত পথে হাটলেও আওয়ামী লীগের অবস্থান বিপরীত মুখী। আওয়ামী লীগের সেই ইদুর বিড়াল খেলা চলছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে। এখানে নৌকার মনোনয়ন পেতে মরিয়া চার জন। এদের মধ্যে দু’জন ঢাকার রাজনীতি করেন। নির্বাচন উপলক্ষে মননয়নের দৌড় ঝাঁপে জোড়ালোভাবে মাঠে নেমেছেন। তারা নির্বাচনী মাঠে নামার আগে স্থানীয় মূল ধারার আওয়ামী লীগের সাথে কোন মতবিনিময় সভা না করেই নিজেদের প্রার্থী নিজেরাই ঘোষনা করেছেন বলে জানা যায়। তাদের নির্বাচনী পোষ্টারে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কোন নেতার ছবি না থাকলেও অন্য উপজেলার এমপিদের ছবি দিয়ে দেয়ালে দেয়ালে পোষ্টার সাটিয়ে রেখেছেন। এদের মধ্যে একজন নৌকার মননয়ন পেতে কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন।

গত পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের পরাজিত প্রার্থী এবারও তার প্রভাবশালী আত্মীয়ের মাধ্যমে নৌকার মননয়নের জন্য মাঠে কাজ করছেন। অন্যদিকে তিনি নিজে নৌকা প্রত্যাশী হলেও তার ছোট ভাই নাগরিক কমিটির ব্যানারে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে নিয়মিত উঠান বৈঠক, আলোচনা ও মত বিনিময় করছেন।

আরেক জন নৌকার মননয়নের জন্য স্থানীয় এক শিল্পপতির দারত্ব হয়েছেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতার উঠান বৈঠকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের কোন নেতা কর্মী না থাকলেও শিল্পপতিদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশায় কাজ করছেন। উপজেলা আহবায়ক কমিটি ও বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমানের সাথে দেখা গেলেও মেয়র নাগরিক কমিটির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার পর তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাথে কোন রকম সমন্বয় রক্ষা করেননি বলেও অনেকে দাবী করেছেন। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্থানীয় নেতাদের সর্বোচ্চ মূল্যায়নই পারে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে। সেখানে স্থানীয় নেতাদের পাশ কাটিয়ে নৌকার মনোনয়ন নিশ্চিত করতে পারলেও বিজয় ছিনিয়ে আনা অত্যন্ত কঠিন কাজ।

বাংলাদেশ যুবলীগের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত সকল মেয়র প্রার্থীদের নিজে দাওয়াত দিলেও একমাত্র গাজী মুজিবুর রহমান ছাড়া কেউ সাড়া দেননি।

যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান বরাবরের মতো স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মাঠে কাজ করছেন। এবারও সাধারন মানুষের প্রশ্ন সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ কি তার সঠিক মূল্যায়ন করবে নাকি অতিতের ঘটনার পূনরাবৃত্তি করবে। গাজী মুজিবুর রহমান দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে হাসনাত পরিবারের সাথে রাজনীতি করছেন। কোন রকম লোভই তাকে এ পরিবারের বাইরে নিতে না পারলেও বার বার বঞ্চিত হয়েছেন কারা নিযাতিত এ নেতা। নিজ দলের নেতাদের প্রকাশ্য বিরোধীতার জন্য ২০১১ সালে মাত্র ৫৫০ ভোটের ব্যবধানে বিএনপি জামাত সমর্থিত প্রার্থীর নিকট পরাজিত হয়েছেন।

সোনারগাঁ পৌরসভা মাঠে আয়োজিত যুবলীগের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত বলেন, আগামী পৌরসভা নির্বাচনে শেখ হাসিনা নৌকা প্রতিক দিয়ে যাকে আমাদের কাছে পাঠাবেন, সেই ই হবে আমাদের প্রার্থী । আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে মাঠে কাজ করে যে কোন মুল্যে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে বঙ্গবন্ধুর আর্দশের রাজনীতির বীজ বপন করে নতুন করে আওয়ামীলীগের ফাউন্ডেশন তৈরী করবো।

আপনার মতামত জানান